গেলো রোববার শেরে বাংলায় ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে একদমই ভাল খেলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভক্ত-সমর্থক সবার ধারনা ও একান্ত বিশ্বাস ছিল, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সঠিক কাজটিই করবেন রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম।
কিন্তু তারা তা পারেননি। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই দু’জনই অস্বাভাবিক ধীর গতিতে ব্যাট করলেন এবং অনেকটা সময় উইকেটে থেকে একটি বাউন্ডারিও হাঁকাতে পারেননি। এক পর্যায়ে ৩৫ বলে ১৪ রান করে লেগস্ট্যাম্পের ওপর পিচ পড়া ডেলিভারিকে ফ্লিক করতে গিয়ে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন রিয়াদ।
দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) শেরে বাংলায় শেষ অনুশীলনের এক পর্যায়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে অনেকক্ষণ সময় কাটালেন রাসেল ডোমিঙ্গো
ইনডোরের ন্যাচারাল টার্ফের এক কোনে রিয়াদকে লেগস্ট্যাম্পের ওপর কিছু হাফ ভলি, ওভার পিচ ডেলিভারি ছুড়ে দিলেন; কিন্তু রিয়াদ প্রথম বলটি স্কোয়ার লেগে ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হলেন।
পরের বার আবার লেগস্ট্যাম্প সোজা হাফভলি সোজা লং অফ বা লং অনে না খেলে স্কোয়ার লেগে ফ্লিক খেলতে গিয়ে আবার ব্যাটে বলে করতে পারলেন না।
তৃতীয়বারও একই ভুলের পূনরাবৃত্তি ঘটায় রিয়াদকে কব্জি না ঘুরিয়ে লেগস্ট্যাম্প সোজা ডেলিভারিকে সোজা ব্যাটে খেলার কথা বললেন ডোমিঙ্গো। শেষ পর্যন্ত সোজা ব্যাটে খেলায় ব্যাটে বলে হলো। তারপর রিয়াদ আত্মবিশ্বাস নিয়ে ড্রাইভ, কাট, পুল সবই খেললেন।
আসলে এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে নেটে কি বলেছেন হেড কোচ? প্রথম ম্যাচে অনেকক্ষণ ক্রিজে থাকার পরও বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি রিয়াদ। তবে কি তাকে বাউন্ডারি হাঁকানোর টিপস দিচ্ছিলেন কোচ?
দুপুরে প্রেস কনফারেন্সে সে প্রশ্নই উঠলো। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, তবে কি অভিজ্ঞ রিয়াদকে নেটে বাউন্ডারি হাঁকানোর টিপসই দিলেন?
ডোমিঙ্গোর জবাব, না, না সেটা বাউন্ডারি হাঁকানোর টিপস নয়। তার মেরে খেলার তাগিদ। চেষ্টা বাড়ানোর কথা বলছিলাম। কারণ, আমার মনে হচ্ছিল রান করা ও শটস খেলার ইচ্ছে, একাগ্রতার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকার প্রতিই রিয়াদ বেশি মনোযোগি ছিল। আর তাই সে লেগস্ট্যাম্পের ওপর হাফ ভলিকেও ব্যাটে বলে করতে পারেনি।
ডোমিঙ্গোর ধারনা, রিয়াদ যদি শটস খেলার চেষ্টা করতেন তাহলে ঠিকই ডাবল কিংবা বাউন্ডারি হাঁকাতে পারতেন।
ওপরের গল্পটাই শেষ নয়। আরও আছে। মূলত বাংলাদেশ হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিমের ওপর এখনো আস্থা রাখতে চান। তার সোজা-সাপটা কথা, আমি রিয়াদ আর মুশফিককে ব্যাক করাতে চাই। আমার বিশ্বাস- বিপদে, কঠিন ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য কাজে লাগবে।
জিম্বাবুয়ে সফরে রিয়াদের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ডোমিঙ্গো বলেন, সেখানে তিন ম্যাচের সিরিজে রিয়াদ ৮০ আর ৩৯ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিল।
তার ধারনা, মুশফিক আর রিয়াদ দুজনই এখন রানের খোঁজে রয়েছেন। ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে বিশ্বের বেশির ভাগ ব্যাটার সেভাবেই খেলে।
ডোমিঙ্গোর শেষ কথা, যে ব্যাটার ২ ম্যাচ আগেই ৮০ করেছে, তাকে নিয়ে চিন্তার কিছু দেখি না আমি। তাদের ব্যাটিং সামর্থ্যের ওপর আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে যথেষ্ঠই।