বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি বগুড়ার লিভারের রোগী মো. মন্তেজার রহমানের (৫৩) দেহে এ অস্ত্রোপচার করা হয়। মন্তেজারকে লিভার দান করেন তার বোন শামীমা আক্তার (৪৩)। তার দেহ থেকে সুস্থ লিভারের ৬০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। মন্তেজারের সিরোটিক লিভারের পুরোটাই কেটে বের করে ফেলা হয় এবং শামীমার দেহ থেকে কেটে নেওয়া সুস্থ লিভারের ৬০ শতাংশ জোড়া দেওয়া হয়। লিভারদাতা শামীমার লিভারটি ধীরে ধীরে রিজেনারেট করবে। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন। বললেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগের তত্ত্বাবধানে লিভার প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার সম্পাদিত হয়। ১২ ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারে সহযোগিতা করেন ভারতের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ও অ্যানেস্থেসিয়া টিম।
অস্ত্রোপচারে লিভারগ্রহীতার পক্ষে ছিলেন অধ্যাপক মো. মোহছেন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র দাস, অধ্যাপক, ডা. আবদুল্লাহ মো. আবু আইয়ুব আনসারী, সহকারী অধ্যাপক ও ডা. সারওয়ার আহমেদ সোবহান। লিভারদাতার পক্ষে ছিলেন- অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান, ডা. মো. নূর ই এলাহী, ডা. মোহাম্মদ সাইফ উদ্দীন ও ডা. আশীষ সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, দেশের স্বল্প আয়ের ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাতে এই চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারে এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় লিভার প্রতিস্থাপন কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন অপারেশনটি ছিল একটি লিভিং ডোনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। এর অর্থ হলো রোগীর আত্মীয় সম্পর্কিত কোনো দাতা থেকে লিভারের একটি অংশ কেটে রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয় (রোগীর সিরোটিক লিভারের পুরোটিই কেটে ফেলা হয়)।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮০ লাখ মানুষ লিভার রোগে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে মারা যায় প্রায় ২৩ হাজার। তবে লিভার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বছরে প্রায় চার-পাঁচ হাজার রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সচ্ছল রোগীরা ৩০ লাখ থেকে কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন করছেন। কিন্তু অসচ্ছলরা লিভার প্রতিস্থাপন করতে না পেরে মারা যাচ্ছেন।