দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে দেশ উন্নয়ন সম্ভব নয়, বিষয়টি জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং বিভাগীয় কমিশনারদের অবগত করা হয়েছে। বললেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের চতুর্থ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ৬৪ জন জেলা প্রশাসককে একত্রে পেয়েছি এবং ৮ জন বিভাগীয় কমিশনারকেও একত্রে পেয়েছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স যেন দেখানো হয়। দুর্নীতির কোনো তথ্য থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের যদি সুযোগ না থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে দেশ উন্নয়ন সম্ভব নয়। অতএব দুর্নীতিকে আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে হোক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং সে যেই হোক, আমরা তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান তদন্ত করতে প্রস্তুত আছি।
মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের একটি অধিবেশন ছিল আধা ঘণ্টার। দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা। আমরা আলোচনা করলাম। আলোচনায় আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিরোধ এবং প্রতিকারমূলক কাজ কী, এটা তাদেরকে বর্ণনা করে জানালাম। আমরা আলোচনায় তাদেরকে অনুরোধ জানিয়েছি, প্রতিটা জেলাতেই সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তারা ওখানে কাজ করেন এবং তাদের দায়িত্ব রয়েছে। তার জেলাতে কোথাও দুর্নীতির কোনো সংবাদ পেলে, তাদের কাছে তথ্য পাওয়ার অনেক সোর্স আছে, তথ্য এলে তারা যেন বসে না থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে সঙ্গে জানান, দুর্নীতি যেন না হতে পারে বা ওখানেই যেন বন্ধ হয়। উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
সামনে আমাদের যে স্বপ্ন আছে উন্নত বাংলাদেশ, দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে যে অনেক বাধার সৃষ্টি হয়, এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছি এবং দুর্নীতিকে আমরা নিয়ন্ত্রণ বা দমনের মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত রাখতে পারি বা পারা যায়, সেজন্য তাদেরকে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে, বলেন তিনি।
‘সেবা নিতে গেলে ভূমি অফিসে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় বলে মানুষের মধ্যে ধারণা রয়েছে। এগুলো ডিসিদেরই তদারকি করার কথা। এগুলো নিয়ে নির্ধারিতভাবে কোনো নির্দেশনা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু ভূমি অফিস নয়, সব অফিসের জন্যই বলা আছে। দুর্নীতি কোথায় কোথায় হয় আমি আগেই বলেছি এটা চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ভূমি অফিসের দুর্নীতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে। ওদিকে তাদেরকে বলা হয়েছে। তারা ওদিকে যাচ্ছে। আশা করি একটা সুফল পাওয়া যাবে।’
ডিসিদের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে তাদেরকে স্বচ্ছ থাকার কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্নীতি করার বিষয়টিতে আমার তো সর্তকবার্তা দেয়ার সুযোগ নেই। এটা আমাদের সংবিধানেই আছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইন তৈরি হয়েছে, কমিশন গঠন হয়েছে। এটা শুধু ডিসিদের বিষয় না, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতি পাওয়া যাবে, অভিযোগ পাওয়া যাবে, অভিযোগটা যদি অনুসন্ধানযোগ্য হয় অবশ্যই আমাদের অনুসন্ধান হবে। এটা তাদেরকে জানানো আছে। পুনরায় জানানোর প্রয়োজন নেই। তারপরেও তাদেরকে জানানো হয়েছে এবং আমাদের মধ্যে অনুসন্ধান তদন্ত আছে।