আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মর্গের সামনে শুধু লাশ আর লাশ

মর্গের সামনে শুধু লাশ আর লাশ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় আগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৫৫টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের লাশ নিয়ে রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। মর্গের সামনে শুধু লাশ আর লাশ। পুড়ে যাওয়া লাশগুলোকে ঘিরে পরিবার পরিজনদের আহাজারি।

পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে এসব লাশ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেলে। পুলিশি পাহারায় আনা লাশগুলোর সব কটিই পোড়া। চতুর্থ তলায় তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। ফ্লোর তালাবদ্ধ না থাকলে এতো প্রাণহানি হতো না বলে জানিয়েছে জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্মণ। 

শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। ৬ তলা ভবনটিতে এখনও আগুন জ্বলছে। আগুন লাগার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। 

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার, আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১১ ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজে যোগ দেন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ শুরু করে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৫৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। লাশগুলো উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। 

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। 

এদিকে, নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।  

এদিকে ঢাকা মেডিকেলে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন নয়জন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মোরসালিন (২৮) নামের একজন। আর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বারেক (৪৮), নাহিদ (২৪), মঞ্জুরুল (২৮), আহাদ (৩৮), লিটন (৪৪)।

এছাড়া এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনজন। তারা হলেন হালিমা (১৩), মাজেদা (২৮) ও আমেনা (৪০)। কারখানার আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন। 

এদিকে ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় উদ্ধারকাজ শুরু হবে। তালাবদ্ধ থাকায় চতুর্থ তলার কোনো শ্রমিক বের হতে পারেননি। তারা দগ্ধ হয়ে ভবনের ফ্লোরেই মৃত্যু হয়েছে। জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্মণ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মর্গের | সামনে | শুধু | লাশ | আর | লাশ