জেদ্দা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ফ্লাইটে এক অসুস্থ প্রবাসী যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পাইলটের নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ওই পাইলটের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সই করা চিঠিতে পাইলট দিলদার আহমেদ তোফায়েলকে কারণ দর্শানোর নোটিশটি দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গেলো ১৫ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট জেদ্দা থেকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশে আসার সময় ফ্লাইটটির (বিজি-৩৩৬) দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েল। ফ্লাইটটি জেদ্দা থেকে টেক-অফ করার পর কবীর আহমেদ নামে এক সৌদি প্রবাসী অসুস্থ বোধ করেন। তখন কেবিন ইনচার্জ বিষয়টি পাইলট ইন কমান্ড হিসেবে দিলদার আহমেদকে অবহিত করেন। দিলদার আহমেদ ফ্লাইটে কোনো চিকিৎসক আছেন কি না, জানতে চাওয়ার নির্দেশনা দেন। এরপর তিনি ফ্লাইটের ককপিট ছেড়ে বিশ্রামের জন্য বাংকে চলে যান।
কিন্তু ওই ফ্লাইটের ধরন অনুযায়ী পাইলট ককপিট ছেড়ে বিশ্রাম নিতে যাওয়া নিয়মবহির্ভূত। এরপর ক্যাপ্টেনের অনুপস্থিতিতে ফ্লাইটে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ফ্লাইট অপারেশনস ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান ক্যাপ্টেনের আসনে বসেন। যা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী তিনি করতে পারেন না।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, অসুস্থ যাত্রীর কথা জানার পরও তিনি ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রামের জন্য বাংকে চলে যান। এরপর ফ্লাইটে উপস্থিত যাত্রীদের মধ্যে এ বি এম হারুন নামে একজন চিকিৎসক অসুস্থ যাত্রীকে দেখেন। অসুস্থ যাত্রীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই চিকিৎসক উড়োজাহাজটি কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণের পরামর্শ দেন। দিলদারের অনুপস্থিতিতে ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ না করে সরাসরি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এটি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, ফ্লাইটটি অবতরণের পর ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ অসুস্থ যাত্রীকে রেখেই উড়োজাহাজ ত্যাগ করেন। এটা বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণের প্রায় ৪০ মিনিট পর অসুস্থ যাত্রী কবীর আহমেদকে বাংলাদেশ–কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদকে আর ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেয়া হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, এই নোটিশ পাওয়ার ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর জানাতে হবে। না হলে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।