ওয়ালস্ট্রিটের পূঁজিবাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি, পতনের ধারা অব্যাহত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুঁজিবাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের পুঁজিবাজারগুলোয় টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চলতি বছরের জুলাইয়ের পর প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। মার্কিন গণমাধ্যম এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে গিয়ে হয় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বা ১৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। এতে তাদের পয়েন্ট ৪ হাজার ১১৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ হিসেবে জুলাইয়ের পর সূচকটির ১০ দশমিক ৩ শতাংশ পতন হয়। ওই সময় ৪ হাজার ৫৮৮ দশমিক ৯৬ ছিল এসঅ্যান্ডপির সর্বোচ্চ পয়েন্ট।

এপির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়,নীতি সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত বলেই পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত তিন মাস ধরে মার্কিন পুঁজিবাজারের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। এর জন্য দায়ি নীতি সুদহার ‘দীর্ঘমেয়াদে’ ধরে রাখার ব্যাপারে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ নীতি সুদহার ‘দীর্ঘমেয়াদে’ ধরে রাখার কথা বলছেন। একই সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের হার ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।  মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের পাশাপাশি  কোম্পানিগুলোর মুনাফার প্রতিবেদন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তাও দরপতনের জন্য দায়ি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর শুক্রবার  উত্থান দেখা যায় অপর সূচক নাসডাকে। এদিন,নাসডাকের পয়েন্ট বৃদ্ধি পায় ৪৭ দশমিক ৪১ বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, যাতে তাদের পয়েন্ট হয় ১২ হাজার ৬৪৩ দশমিক ০১।

আমাজনের শেয়ারদর বাড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। মুনাফার প্রতিবেদন প্রকাশের তাদের শেয়ারে বৃদ্ধি দেখা যায়। খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি এই গ্রীষ্মে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা ও রাজস্ব আয় করেছে। ওয়াল স্ট্রিটে অন্যতম বৃহৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর এসঅ্যান্ডপি ৫০০-সহ সব সূচকের ওঠা-নামায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

ওয়াল স্ট্রিটে যেসব বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সূচকের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে তাদের একসঙ্গে বলা হয় ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’।আমাজন রয়েছে এসব কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে। তাই এদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা তুলনামূলক বেশি। তবে পতনের ধারায় রয়েছে ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের অন্যতম কোম্পানি অ্যালফাবেট,মেটা ও টেসলার।

ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের বাইরে রয়েছে ইনটেল। মার্কিন এই কোম্পানিটি বাজারের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শুক্রবার তাদের শেয়ারদর বাড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তাদের শেয়ার দর বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে এই গ্রীষ্মে বেশি মুনাফা করায। তবে স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানি ও আর্থিক সেবা খাতের সূচকগুলো। তাই বিনিয়োগকারীরা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছেন।

বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি শেষ প্রান্তিকে হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে এক্সন মবিলের শেয়ারদর কমে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। অন্যদিকে, শেভরনের কমে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

Recommended For You

Exit mobile version