আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেন স্টোকস

বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার ইংলিশ তারকা বেন স্টোকস হুট করেই জানিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এবার বিরতিতে যাচ্ছেন তিনি। ফের করতে ফিরবেন তিনি নিজেও জানেন না।

ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বেন স্টোকসের কাছে ঋণী ইংল্যান্ড ও ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। দেশটিকে একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ এনে দেয়ার কীর্তি তো আছেই। কিছুদিন আগে যখন মূল ওয়ানডে দলকে করোনার কারণে পাকিস্তান সিরিজ থেকে ছিটকে দিয়েছিল, সে সময় হাতের চোট উপেক্ষা করেও অনভিজ্ঞ এক দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ফিরেছিলেন এই অলরাউন্ডার। পুরোপুরি সুস্থ না হয়েও প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে সে সিরিজ খেলার ব্যাপারে স্টোকস বলেছেন, দল এমন বিপদে না পড়লে এমন চোট নিয়ে খেলার কথা চিন্তাও করতেন না।
 
এমন এক নিবেদিত ক্রিকেটারকে ভারতের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। চোটের কারণে এমনিতেও শুরু দিকে দুটি ম্যাচ খেলা হতো না। সে সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্টোকস।

এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরাসরি কোনো কারণ দেখানো হয়নি। তবে ইসিবির বিবৃতিতে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, সেটায় বোঝা গেছে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তির লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত স্টোকসের। করোনাকালে একটি সিরিজ মানেই কঠিন পরীক্ষা।

কোয়ারেন্টিন পর্ব, আইসোলেশন ও জৈব সুরক্ষা মিলিয়ে ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময় পরিবার থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে। সে সঙ্গ গত এক বছর অনেক বড় একটা সময় সফরে কাটিয়েছেন স্টোকস। ঘরের মাঠের খেলাগুলোতেও পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল। এরই মাঝে পাকিস্তানের সঙ্গে গত বছর সিরিজের মাঝপথে একবার নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিলেন বাবাকে দেখতে। ডিসেম্বরে বাবার মৃত্যু সংবাদও পেয়েছেন বেন।

এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে ইংল্যান্ডের ছেলেদের ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাশলি জাইলস বলেছেন, ‘নিজের অনুভূতি ও ভালো থাকার ব্যাপারে মুখ খুলে বেন অনেক সাহসের পরিচয় দিয়েছে। সব সময় আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল আমাদের লোকজনকে মানসিকভাবে ভালো রাখা, তাদের সুরক্ষা দেয়া। স্বাভাবিক সময়েই খেলার জন্য প্রস্তুত হওয়া এবং শীর্ষ মানের খেলা উপহার দেয়া অনেক চাপ সৃষ্টি করে। বর্তমান মহামারির সময়ে সেটা আরও বহুগুণে বেড়েছে।’

করোনার কারণে ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থ্যের কী হাল সেটাও প্রকাশ পেয়েছে জাইলসের বিবৃতিতে, ‘অনেক বড় একটা সময় পরিবার থেকে দূরে থাকা, ন্যূনতম স্বাধীনতার মধ্যে থাকা খুবই কঠিন। গত ১৬ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে এমন আবহের মধ্যে খেলার প্রভাব সবার মধ্যেই পড়েছে। বেনের যতটুকু সময় দরকার ততটুকুই পাবে। আশা করি ভবিষ্যতেও ইংল্যান্ডের হয়ে তাকে খেলতে দেখব। 

এদিকে বুধবার থেকে শুরু হবে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজ। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারকে ছাড়াই ভারতের মোকাবিলা করতে হবে ইংল্যান্ডকে। স্টোকস সরে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে সমারসেটের অলরাউন্ডার ক্রেইগ ওভারটনকে দলে ভিড়িয়েছে ইংল্যান্ড দলের নির্বাচকরা।

শুক্রবার রাতে এক স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফিস লিখেছেন,  ‘বায়ো-বাবল ক্লান্তির প্রথম হেভিওয়েট শিকার। এছাড়া তার আঙুলের চোটও আছে। দেশের জন্য খেলা এবং পারফর্ম করা এমনিতেই বিশাল দায়িত্ব এবং মানসিক চাপের।আর এখন কোভিড ১৯ -এর জন্য রয়েছে বায়ো-বাবল। ইশ! যদি সবাইকে বোঝানো যেত যে খেলোয়াড়দের জন্য সময়টা কতটা কঠিন!’

সূত্র: আইসিসি ক্রিকেট
 
এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন