আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

ইথিওপিয়ায় বিশ্ব ঐতিহ্যের লালিবেলা শহর বিদ্রোহীদের দখলে

ইথিওপিয়ার আমহারা অঞ্চলের লালিবেলা শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী সংগঠন তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট-টিপিএলএফ। শহরটিতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির স্থানীয় প্রশাসন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, টিপিএলএফের সদস্যদের লালিবেলা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন লালিবেলা শহরের ডেপুটি মেয়র মানদেফ্রো তাদেসে। তিনি বলেন, সেখানে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। তবে শহরটি থেকে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাচ্ছে বাসিন্দারা।

শহরের ঐতিহাসিক গির্জাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন লালিবেলার ডেপুটি মেয়র। মানদেফ্রো তাদেসে বলেন, গির্জাগুলো বিশ্ব ঐতিহ্য। এই সম্পদের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সহযোগিতা প্রয়োজন।

পাথরের তৈরি ১৩ শতাব্দীর গির্জার জন্য বিখ্যাত লালিবেলা শহর। সেখানে মধ্যযুগীয় ১১টি একশিলা গির্জা রয়েছে। যাতে আঁকা রয়েছে ওই সময়ের বিভিন্ন চিত্রকর্ম। যা লাখো অর্থডক্স খ্রিস্টানের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৮ সালে শহরটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয় ইউনেস্কো।

বিদ্রোহীরা নগরীটি ঘেরাও করার পরই জীবন বাঁচাতে সেখান থেকে পালিয়ে যায় স্থানীয়রা। তবে লালিবেলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো নিয়ে চিন্তিত সবাই। ইতোমধ্যে প্রতিবেশী দুই শহর আমহারা ও আফার থেকে পালিয়েছে অন্তত তিন লাখ মানুষ।

এদিকে, লালিবেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিষয়ে শ্রদ্ধা দেখাতে তাইগ্রে বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। ইথিওপিয়ায় চলমান সংঘাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়ছে।

গেল বছরের নভেম্বর পর্যন্ত তাইগ্রের আঞ্চলিক সরকার হিসেবে ক্ষমতায় ছিল টিপিএলএফ। ওই মাসেই বিদ্রোহীদের ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সরকারি বাহিনী। টিপিএলএফকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দেয় ইথিওপিয়া সরকার। নভেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর টিপিএলএফ ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। তাইগ্রে ছাড়িয়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী আমহারা ও আফার অঞ্চলে। দুই পক্ষের সংঘাতে নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ।

তাইগ্রেতে টিপিএলএফ এবং সরকারি বাহিনী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন