আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

রাজশাহীতে কমেছে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত

রাজশাহীতে গত তিনমাস পর করোনা ভাইরাসে সর্বনিম্ন হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন রাজশাহীতে করোনার সংক্রমন অনেকটাই কমে এসেছে। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা ও করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ৯ জন। আর এই মৃত্যু গত তিনমাসের মধ্যে কম। মৃতদের মধ্যে রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার ১জন করে, নাটোর ও পাবনার ২ জন করে মারা গেছে। এরমধ্যে করোনায় মারা গেছে ৫ জন ও এর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩ জন। ১ জন করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এছাড়াও এ পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পর মারা গেছে ১৫ জন।

আর গত ২৪ ঘন্টায় করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পর মারা গেছে একজন। এ নিয়ে করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ ডেল্টা ভ্যারিয়েনের থাবার গত ৭৩ দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ও এর উপসর্গ নিয়ে ১০৭৬ জনের মৃত্যু হলো।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দুই ল্যাবে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫৫ জনের। আর করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৩ জনের শরীরে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৮.৬২%। এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দফায় দফায় ওয়ার্ড ও শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পর বর্তমানে এখানে করোনা ইউনিটে ২০টি আইসিইউসহ শয্যা সংখ্যা রয়েছে ৫১৩টি। এরমধ্যে রোগি ভর্তি আছে ৩৮২ জন। আর গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করোনা রোগি ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন।

এদিকে করোনার পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হারও আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। চলতি মাসের শুরুতেও করোনায় মৃতের হার ছিল ৫০শতাংশের উপরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার এক লাফে তা কমে ২৮.৬২শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

শনাক্তের দিক থেকে দেখা গেছে, গত ২৪ঘন্টায় দুটি ল্যাবে ২৫৫জনের করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৩জনের শরীরে। সেদিক থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকে একই পরিমান নমুনা সংগ্রহের পর দেখা গেছে এর হার ছিল প্রায় শতাধিক। বিশেষ করে গত জুলাই মাসজুড়ে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৬০শতাংশের বেশি। সেই হিসাবে ২৫ জুলাইয়ের পর থেকে শনাক্ত কমতে থাকে। তবে মৃত্যু উঠানামার মধ্যে ছিল। আগষ্টের শুরুতেও করোনার শনাক্ত হার ছিল প্রায় ৫০শতাংশ। মৃত্যুর হার ছিল ৪০ এর নিচে। কিন্তু হঠাৎ করেই চলতি সপ্তাহজুড়ে করোনা শনাক্তের হার কমেছে। তেমনি রাজশাহীতে মৃত্যুর হারও কমে এসেছে।

অপরদিকে গত জুলাইমাসে রামেক হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু উঠেছিল সর্বোচ্চ ২৫জন। জুলাই মাস শেষে আগস্ট পড়ার পর থেকে করোনায় মৃত্যুর হার কমতে থাকে। চলতি মাস পড়ার পর এই মৃত্যু ২০ ছুঁইছুই করলেও তা পার হয়নি। চলতি আগস্ট মাসজুড়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ২১জন। দিন গড়ানোর সাথে সাথে এ মৃত্যু কমতে থাকে। তবে উঠানামার মধ্যেই ছিল করোনায় মৃত্যু।

এছাড়াও গত বুধবারের আগ পর্যন্ত মৃত্যু ১০জনের উপরে ছিল। কারণ গত বুধবার ১১আগস্ট করোনায় মৃত্যু ছিল ১০জন। আবার ১০ আগস্ট এই মৃত্যু গিয়ে দাঁড়ায় ২১জনে। এর আগের দিন ৯ আগস্ট মৃত্যু কমে ১১জনে দাঁড়ায়। তার আগের দিন (৮আগস্ট) মৃত্যু হয়েছিল ১৮জনের। সব মিলিয়ে দিন যত গড়াচ্ছে করোনায় মৃত্যু ততই কমছে। মৃত্যু কমার সাথে শানাক্তের হারও কমছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, আগের চেয়ে এখন করোনায় রোগী ভর্তির হার কমেছে। গত জুলাই মাসে করোনা রোগির এতোটাই চাপ ছিল যে ভর্তি সব রোগিদের বেড দেয়া সম্ভব হতো না। করোনা ইউনিটে বেড বাড়ানোর পরও সব রোগি বেড পেতোনা। কিন্তু আগস্ট মাস  থেকে রোগী ভর্তির চাপ কমতে থাকে।

তিনি বলেন, তিন দফা বৃদ্ধির পর করোনা ইউনিটে এখন ৫১৩টি বেড রয়েছে। এরমধ্যে রোগী ভর্তি আছে ৩৮২ জন। এখন নতুন রোগী ভর্তি হলেও প্রতিনিয়ত ১৩০ থেকে ১৩৫টি বেড ফাঁকা পড়ে থাকছে। যদিও আগে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হতো ৫০ থেকে ৬০জনের মত। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ জনের মধ্যে। মূলত চলতি মাসে প্রতিদিন ৪০ জনের নিচে করোনার নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন