আর্কাইভ থেকে এশিয়া

স্কুলে ফিরেছে আফগান মেয়েরা

আফগানিস্তানে সাদা হিজাব এবং কালো বোরকা পরে স্কুলে ফিরেছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। তালেবানদের কাবুল দখলের দুই দিন পরই এমনটা দেখা গেলো পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহরে। দেশজুড়ে যে অস্থিরতা চলছে তা উপেক্ষা করে আবারও লেখাপড়ায় মনোযোগী হচ্ছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা।

কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, চলতি মাসে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের তুমুল লড়াই চলে। দখলে নেয় একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী। নিরাপত্তা সংকট ও ভয়ে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। আপাতত সেই শঙ্কার মেঘ কেটে গেছে। হেরাতের দখল তালেবানের হাতে যাওয়ার তিনদিন পর ছাত্রীদের স্কুলে ফেরার ছবি ক্যামেরাবন্দী করেন বার্তা সংস্থা এএফপির একজন আলোকচিত্রী।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকটাই বদলে গেছে আফগানিস্তানের স্বাভাবিক চেহারা। রাস্তায় রাস্তায় নিরাপত্তায় নেমেছে তালেবান সদস্যরা। কাবুল দখলের তৃতীয় দিনেই স্কুলে যোগ দিয়েছে হেরাতের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

স্কুলে যোগ দেওয়া হেরাতের স্থানীয় এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা অন্যান্য দেশের মতোই উন্নতি করতে চাই। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করুক তালেবান। আমরা আর যুদ্ধ চাই না। এই দেশে শান্তি ফিরে আসুক।

হেরাতের একটি গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষ বসিরা বসিরতখা বলেন, মহান আল্লাহর কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমরা আবারও স্কুল চালু করতে পেরেছি। হিজাব মেনেই ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে আমাদের ছাত্রীরা।

১৯৯০ এর দশকে আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণের পর শরিয়াহ আইনের কঠোর সংস্করণের প্রয়োগ করেছিল তালেবানরা। এতে নারীদের শিক্ষা ও চাকরি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তারা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগান শাসন করে তালেবান। পরবর্তীতে তালেবান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এবার ক্ষমতায় এসে তালেবান নীতিতে নারীদের জন্য কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতা দখলের পর কাবুলে তালেবানের প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ইসলামের নীতি অনুযায়ী নারীদের কাজ করতে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তালেবান।

বিশ বছর আগে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনীর আক্রমণে উৎখাত হওয়া তালেবান এবং আজকের তালেবানের মধ্যে পার্থক্য জানিয়ে জাবিহুল্লাহ বলেন, আদর্শ এবং বিশ্বাসের কোন পার্থক্য নেই। তবে অভিজ্ঞতা, পরিপক্বতা এবং অন্তর্দৃষ্টির ক্ষেত্রে সন্দেহাতীতভাবে অনেক পার্থক্য আছে।

চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরেক তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহীন আশ্বাস দিয়েছেন, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন আফগান নারীরা। তালেবানের দখল করা এলাকাগুলোতে অনেক স্কুল এখনও চালু আছে বলে জানান তিনি। তবে তালেবান প্রশাসনের শিক্ষানীতি কেমন হবে তা নিয়ে এখনও কিছুই স্পষ্ট করেননি তালেবান মুখপাত্র।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন