কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্বে হাক্কানি নেটওয়ার্ক
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব কট্টরপন্থি হাক্কানি নেটওয়ার্কের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের হাতে দিয়েছে তালেবান। আল-কায়েদাসহ অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্কের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছে, হাক্কানি নেটওয়ার্কের হাতে কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এটি তালেবানের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বিপরীত। কারণ, তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাদের ১৯৯৬-২০০১ সালের শাসনামলের চেয়ে এবার মধ্যপন্থি পথ বেছে নেবে তারা।
এছাড়া হাক্কানি নেটওয়ার্কের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি আফগানিস্তানে আল-কায়েদার ফিরে আসার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তাদের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত গেল বছর কাতারে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার সময় তালেবান নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে। কারণ, আফগানিস্তান আবারো অন্যান্য বিদ্রোহীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবে না বলে আলোচনায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালেবান।
গতকাল বৃহস্পতিবার কাবুলে হাক্কানি নেটওয়ার্কের জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল-রহমান হাক্কানিসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন কাতার আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উল্লেখযোগ্য ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের সংগঠন আফগানিস্তানের ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কাউন্সিল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। পরে প্রকাশ্যে আবদুল্লাহ ইঙ্গিত দেন, আফগান রাজধানীতে নিরাপত্তার তত্ত্বাবধান করবেন খলিল আল-রহমান হাক্কানি। তিনি আশ্বাস দেন, খলিল আল-রহমান হাক্কানি কাবুলের নাগরিকদের সঠিক নিরাপত্তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করবেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খলিল আল-রহমান হাক্কানিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ। তাকে ধরার জন্য এবং তথ্য দানের জন্য ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। জাতিসংঘের সন্ত্রাসীদের তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত হাক্কানি।
অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ ব্রিটিশ কূটনীতিক আইভর রবার্টস বলেছেন, হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যদের কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া শিয়ালকে মুরগির খামারের দায়িত্ব দেওয়ার সমতুল্য।
আইভর রবার্টস কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রজেক্ট বা সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা, যা চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো নিয়ে গবেষণা করে।
আইভর রবার্টস জানান, তালেবানের পদক্ষেপে বিস্মিত তিনি। বলেন, আমি জনসংযোগের দৃষ্টিকোণ থেকে ভেবেছিলাম তালেবান এর চেয়ে একটু বেশি বুদ্ধি রাখে।
এসএন