আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

২৪ ঘণ্টায় করোনায় রামেক ও খুলনায় ৯ জনের মৃত্যু

গেলো ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পাঁচজন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনায় তিনজন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে হাসপাতালে রাজশাহীর দুজন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন মারা গেছেন।

আর করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর একজন করে মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ছাড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন মারা গেছেন। 

পরিচালক আরও জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৮৬ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৪০ জন। এক দিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ১৪৫।

বর্তমানে রাজশাহীর ৬৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২১ জন, নাটোরের ১৯ জন, নওগাঁর পাঁচজন, পাবনার ১৪ জন, কুষ্টিয়ার সাতজন, চুয়াডাঙ্গার দুজন, জয়পুরহাটের একজন এবং সিরাজগঞ্জের একজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৬৬ জন। করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ১৯ জনের। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২৫ জন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ১৭ জনের নমুনায়। 

একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৩৬০ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪৩ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং জয়পুরহাটের ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে। 

প্রসঙ্গত, চলতি সেপ্টেম্বরের এই তিন দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে করোনায় ৯ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ৯ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ৪ জনের মৃত্যু হয়।

এর আগে গত আগস্ট মাসে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩৭৪ জন। এর মধ্যে করোনায় ১৫৪ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৮৬ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে, খুলনায় করোনা আক্রান্ত হয়ে গেল  ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে খুলনা ডেডিকেট করোনা হাসপাতালে তিনজন এবং শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন মারা যান।

খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকালপারসন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। 

খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, গেল দিনে একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২০জন। এবং এ দিনে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন দুইজন।

তবে গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেনারেল হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। জেলার চারটি হাসপাতালে ১১৯ জন চিকিৎসাধীন থাকলেও জেনারেল (সদর) হাসপাতালে টানা পাঁচ দিন ধরে কোনো রোগী নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৮জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন তিনজন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চারজন। গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আটজন।

এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪২ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। তাদের মধ্যে খুলনার ২৯, বাগেরহাটে ৯, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও গাজীপুরের একজন করে শনাক্ত হন।

মুক্তা মাহমুদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন