আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

বাপ-দাদার জমিতে ইপিজেড হতে দেবে না সাঁওতালরা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অবস্থিত রংপুর চিনিকলের আওতাধীন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের ১ হাজার ৮৪২ একর জমির উপর বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে ওই এলাকার আদিবাসী সাঁওতালরা।

শনিবার (৪ সেপ্টম্বের) দুপুরে ওই জমিকে পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে ইপিজেড নির্মাণে বেপজার কর্মকান্ড বন্ধের দাবিতে  গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কাটামোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্থানীয় সাঁতওালরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন- সংগ্রাম কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মাস্টার, সাংগঠনিক স¤পাদক স্বপন শেখ, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, ব্রিটিশ সরেন, ইসতারিনা মুরমু, থমাস হেমব্রন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শর্ত সাপেক্ষে নেয়া চিনিকলের ওই জমি তাদের বাপ-দাদার।

সাঁওতালরা তাদের পৈত্রিক জমিতে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা-ইপিজেড স্থাপন করতে দেবে না। তারা বলেন, ফার্মের এ জমি সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতসহ বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান থাকলেও সেগুলোর নিষ্পত্তির আগেই ইপিজেড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার সামিল এবং বেআইনি।

উল্লেখ্য, সাঁওতাল ও বাঙালিদের এক হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ এবং সেখানে সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গ করে ওইসব জমি লিজ দিলে তাতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়।

ফলে গত ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙালি অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড়ো বসতি স্থাপন করে।

পরে গত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ওই খামারের বাকি জমিতে চাষ করা আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে নয়জন পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ ও চার জন সাঁওতাল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন সাঁওতাল শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ মারা যান।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন