শ্রীলঙ্কার স্থানীয় নির্বাচন স্থগিত
ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের জেরে প্রয়োজনীয় তহবিল না মেলায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নির্ধারিত সময়সূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এক বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকের পর এক লিখিত ঘোষণায় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তহবিল সংকট চলার কারণে পূর্বনির্ধারিত দিন আগামী ৯ মার্চ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন ও ভোটগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। নির্বাচনের পরবর্তী সময়সূচি ৩ মার্চ জানিয়ে দেয়া হবে।
‘প্রয়োজনীয় তহবিলের জন্য আমরা ইতোমধ্যে (পার্লামেন্টের) মাননীয় স্পিকার মাহিন্দা ইয়াবা আবেইওয়ার্দানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।’
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মে মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখতে একটি পিটিশন জমা দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ছিল সেই পিটিশনের ওপর শুনানি; কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত এক সিদ্ধান্তে সেই শুনানি মুলতবি করার পরের দিনই নির্বাচন স্থগিত করল কমিশন।
চলতি ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টকে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের জেরে আগামী ৯ মার্চ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা কঠিন হবে।
বৃহস্পতিবার এক ভাষণে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, শ্রীলঙ্কা এখন অর্থনৈতিক সংকটের যে ঘূর্ণিতে আছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দায়িত্ব হলো দেশকে এই ঘূর্নী থেকে বের করে আনা।
ভাষণে যদিও তিনি সরাসরি বলেননি, তবে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন— বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেশের টালমাটাল অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
তার ভাষণের পর বিরোধী দল সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজিবি) অবশ্য সমালোচনা করে বলেছে, দেশের রাজনীতিতে নিজের নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় করতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট।
শ্রীলঙ্কায় বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন বিক্রমাসিংহে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশজুড়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন ও ভোটগ্রহণ বাবদ অন্তত ১ হাজার কোটি শ্রীলঙ্কান রুপি প্রয়োজন।
গত বছর মার্চেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেবারও একই কারণে, অর্থাৎ অর্থনৈতিক সংকটের জেরেই স্থগিত করা হয়েছিল নির্বাচন।