‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১’ প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১’ জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুর। আজীবন সম্মাননাসহ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার ও সম্মাননা নিয়েছেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। গেলো ২০২১ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেয়া হয়েছে শিল্পীদের।
বৃহস্পতিবার (৯ মোর্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি হাসানুল হক ইনু এবং সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন যারা- এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনা জলের কাব্য’। এই শাখায় পুরস্কার গ্রহণ করবেন সিনেমা দুটির প্রযোজক মাতিয়া বানু শুকু ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। সেরা সিনেমা পরিচালক হিসেবে ‘নোনাজলের কাব্য’ সিনেমার জন্য পুরস্কার গ্রহণ করবেন তরুণ নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে অন্যতম আগ্রহের ক্যাটাগরি সেরা অভিনয়শিল্পী। এবার যুগ্মভাবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন মীর সাব্বির (রাতজাগা ফুল) ও সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা)। তাসনোভা তামান্না ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার জন্য আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন। ২০২১ সালে সিনেমায় অভিনয় করার জন্য যুগ্মভাবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে গ্রহন করেন আজমেরী হক বাঁধন ও তাসনোভা তামান্না। তাসনোভা ‘নোনাজলের কাব্য’ সিনেমার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন।
‘নোনাজলের কাব্য’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু। এটা তার চতুর্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।ক্যারিয়ারে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ করেন শম্পা রেজা। তিনি পার্শ্ব চরিত্রে ‘পদ্মাপুরাণ’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। অভিনেতা জয়রাজও ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি খলচরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্য সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি এই সম্মাননা পাচ্ছেন ‘মৃধা বনাম মৃধা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য। সেরা গায়ক হিসেবে ‘পদ্মাপুরাণ’ সিনেমার ‘শোনাতে এসেছি আজ’ গানের জন্য পুরস্কার গ্রহণ করেন মুহিন। এবং পদ্মাপুরাণ সিনেমায় ‘দেখলে ছবি পাগল হবি’ গানটির জন্য সেরা গায়িকার পুরস্কার পেয়েছেন চন্দনা মজুমদার। রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমায় অভিনয়ের জন্য আলোচনায় ছিলেন শিশুশিল্পী আফিয়া জাইন জায়মা। তিনি সেরা শিশুশিল্পী শাখায় পুরস্কার গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, এ ছাড়া শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়), সেরা সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন), সেরা গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা, যৈবতী কন্যার মন), সেরা সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা, যৈবতী কন্যার মন), সেরা কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), সেরা চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি), সেরা সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)।
সেরা সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি), সেরা শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য), সেরা চিত্রগ্রাহক দলগত সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি), সেরা শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), সেরা পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য) এবং সেরা রূপসজ্জাকর দলগত মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি)। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ধড়’ (আকা রেজা গালিব), সেরা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ (কাওসার চৌধুরী)।