আর্কাইভ থেকে ফিচার

ইসলাম নিষিদ্ধের দেশে যেভাবে পালিত হয় রোজা!

এক সময় ইসলাম নিষিদ্ধ ছিল কাজাখস্তানে। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে মানুষ ইসলাম চর্চায় মনোযোগী হচ্ছে।ইসলাম চর্চায় এগিয়ে যাওয়া দেশটি হচ্ছে মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

কাজাখস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আলমাতি। তবে দেশের রাজধানী উত্তরে এলাকায়। রাজধানীর নাম আস্তানা। এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের সেদেশে ৭০ ভাগ মুসলমান।

মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্বেও এখানে রমজানে কর্মঘণ্টা বাড়ানো অথবা কমানোর কোনো নিয়ম নেই। রমজান মাসে সবাই সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী অফিস করে। ইফতার করে।

কাজাখস্তানের মুসলমানদের দৈনিক সাড়ে ১৮ ঘণ্টা রোজা রাখতে হয়। দেশটির ২০ শতাংশ মুসলমান নামাজ পড়ে। তবে রোজাদারের পরিমাণ আরও অনেক বেশি।

দেশটিতে রমজান মাসে ইবাদত বন্দেগিতে কোনো কমতি নেই। সারারাত মসজিদগুলোতে চলতে থাকে নামাজ।

কাজাখস্তানের মানুষের সংস্কৃতিতে যেহেতু হাজার বছরের যাযাবর জনগোষ্ঠীর প্রভাব রয়েছে, তাই খাবারেও এর প্রভাব আছে।

তাদের পছন্দের ইফতারে থাকে ভেড়া, ঘোড়া, উট এবং গরুর মাংসের বিভিন্ন খাবার।

ইফতারের সময় খাওয়ার জন্য পশুর কলিজা, ভুড়ি, পা, এমনকি আস্ত ভেড়ার মাথা রান্না করেন তারা।

সাধারণত ঘরের খাবারের তালিকাতে থাকে ভেড়া বা উটের মাংস। আর দাওয়াত বা উৎসবের খাওয়ায় ঘোড়ার মাংস রান্না করা হয়। আবার উট আর ভেড়ার দুধ থেকে তৈরি করা হয় নানা রকম ইফতার।

বেশবেরমেক, কুউরদাক, কিলমাই, ঝায়া, মানতি, আয়রান, সুবাদ, কাইনিস, পিলাস, বুরসাকি এরকম নানান বাহারি নামে খাবার থাকে ইফতার মেন্যুতে।

কাজাখদের সবচেয়ে পছন্দের মধ্যে অন্যতম ইফতার বেশবেরমেক।  গরু বা ভেড়ার মাংস ২ থেকে ৩ ঘন্টা পানিতে সেদ্ধ করে লুডুলসের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ ধরনের এই খাবারটি। সাথে সরপা নামে এক প্রকার মাংসের ঝোল থাকে। সেই ঝোল ঐতিহ্যবাহী কাজাখ বাটিতে ঢেলে পরিবেশন করা হয়।

কাজাখদের আরেকটি জাতীয় খাবার হচ্ছে `কুউরদাক'।

অন্যান্য জনপ্রিয় মাংসের খাবারের মধ্যে আছে “কেজি”। এই খাবার তৈরী করা হয় ঘোড়ার মাংস দিয়ে। দেশটির বিত্তশালীরা শুঝুক, কুইরদাক, ঝাল এবং ঝায়া নামে বিভিন্ন খাবার খায়।

কাজাখস্তানের আরেকটি জনপ্রিয় ইফতার হচ্ছে পিলাফ (পোলাও)।  চাল ও মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয় এই পোলাও। মেশানো হয় গাজর, পেঁয়াজ ।

কাজাখস্থানে প্রধান ফল আপেলসহ অন্যান্য ফলমূলও তারা ইফতারে খেয়ে থাকেন।

তবে শীত প্রধান দেশ হওয়ায় ইফতারে শরবত খায় না কাজাখরা। এসময় চা খেতে পছন্দ করে তারা।

রমজান মাসে কাজাখস্তানে নারীদের কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা সেদেশের ঐতিহ্যের অংশ। কাজাখস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আলমাতির কেন্দ্রীয় মসজিদের সহযোগিতায় আলমাতি ও পাভলদার শহরে প্রতিবছর এ জাতীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন