আর্কাইভ থেকে জাতীয়

‘বঙ্গবন্ধু সব শুনে পিঠে একখানা কিল মেরে বললেন- আচ্ছা এখন তুই নোটিশ তুইলা পালা’

আমি একদিন রিকশায় করে সংসদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাচ্ছি। কিন্তু গেটে যেতে নিরাপত্তা প্রহরী রিকশা থামিয়ে দিয়ে বলল রিকশা ভেতরে যাবে না।কিন্তু গাড়ি ঢুকছে অবলীলা। নিরাপত্তারক্ষীকে অনেক যুক্তি তর্ক দিয়েও কাজ হলো না। ফলে রিকশা ছেড়ে পায়ে হেঁটে সংসদে প্রবেশ করি। তাৎক্ষণিকভাবে সমস্ত ঘটনা উল্লেখ করে, আমার অধিকার ক্ষুন্নের একটি নোটিশ জমা দিই। বললেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। আজ শুক্রবার (৭ মার্চ) জাতীয় সংসদের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সংসদে দেয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, এক দিন পরেই তৎকালীন চিফ হুইপ মরহুম শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন নোটিশ প্রত্যাহারের জন্য আমাকে অনুরোধ করেন. আমি প্রত্যাহারের প্রত্যাহারে রাজি না হলে কিছুক্ষণ পরেই সংসদ নেতা বঙ্গবন্ধু নিজেই আমাকে ডেকে বললেন- কিরে তোর কি হয়েছে? আমি বললাম- যারা গাড়িতে আসে, তাদেরকে যেমন ড্রাইভার নিয়ে আসে, তেমনি আমাকেও রিকশায় ড্রাইভার নিয়ে আসে। গাড়ি ঢুকতে দেয়, কিন্তু রিকশা নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না এটা তো ঠিক না, তাই আমি নোটিশ দিয়েছি। আমি প্রত্যাহার করতে চাই না। বঙ্গবন্ধু সব শুনে পিঠে একখানা কিল মেরে বললেন- আচ্ছা এখন তুই নোটিশ তুইলা পালা।তোর তো গাড়ি নাই, দেখি কি করা যায়। পরে অবশ্যই একটা পুরনো গাড়ির ব্যবস্থা হয়েছিল। যদিও সেটি কিনতে এবং মেরামত মেরামত করতে নতুন গাড়ি কেনার সমানই খরচ হয়ে ছিল। এভাবে বঙ্গবন্ধু সকল সংসদ সদস্যদের অভাব অভিযোগ ও দাবি দাওয়া খেয়াল রাখতেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট একক ভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করলে তিনি আমাকে ডেপুটি স্পিকার পদে মনোনয়ন সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, আমার জীবনে বঙ্গবন্ধুর কথায় শেষ কথা। সেই থেকে কিশোরগঞ্জকে কেন্দ্র করে আমার আইন পেশা ও রাজনীতির বিচরণ। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও পরিচয় ও আলাপচারিতার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। আবদুল হামিদ বলেন, মাঝেমধ্যে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হতো, অনেক সময় তিনি নিজেও ডেকে পাঠাতেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমার একমাত্র ধ্যানধারণা। তাঁর নীতি ও নির্দেশনে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় বিষয়।

https://youtu.be/eIA62w-JwGU

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন