ফুলবাড়ীতে দুই স্কুল ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্কুল পড়ুয়া দুই কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই কিশোরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার নাম জয়ন্ত কুমার মোহন্ত। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং একই ইউনিয়নের পূর্ব পানিমাছকুটি গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ। তবে এই অভিযোগ প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনটি।
ভুক্তভোগী দুই কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, গত রবিবার (২২ মে) ছাত্রলীগ নেতা জয়ন্ত ফোন করে ওই কিশোরদের তার দোকানে ডাকেন। তার ফোন পেয়ে দুই কিশোর তাদের আরও দুই বন্ধু সহ উপজেলা গেট সংলগ্ন জয়ন্তের দোকানে যায়। জয়ন্ত তাদেরকে আপ্যায়ন করিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর তিন কিশোরকে বাড়ির পাশের একটি দোকানে চা-নাস্তা করতে পাঠিয়ে দেন। এক কিশোরকে জয়ন্ত নিজ বাড়িতে নিয়ে গলায় ছরি ধরে ভয় দেখান এবং ‘ধর্ষণ’ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর কিছু পরে ভুক্তভোগী কিশোরকে তার বন্ধুরা খুঁজতে আসলে জয়ন্ত আরো এক কিশোরকে আটক করেন। এতে অপর দুই কিশোর পালিয়ে যায়। এরপর জয়ন্ত দ্বিতীয় কিশোররের গলায় ছুরি ধরে তাকেও ‘ধর্ষণ’ করেন। পরে কিশোররা বাড়িতে ফিরে অসুস্থ বোধ করলে তাদের অভিভাবকদের জিজ্ঞাসায় তারা ঘটনটি খুলে বলে। এরপর তাদেরকে সোমবার সকালে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। কিছু ফাইন্ডিংস রয়েছে। আমারা ভুক্তভোগীদের কুড়িগ্রাম হাসপাতালে রেফার্ড করে দিয়েছি।
তবে গ্রেফতারের আগে এই অভিযোগকে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জয়ন্ত কুমার মোহন্ত। তিনি বলেন, আমি একা একই সময়ে দুই কিশোরকে ধর্ষণ করতে পারি? এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমি ওই চার কিশোরের সাথে তাদের সাইকেলে করে গতকাল (রবিবার) দুপুরে বাড়িতে গিয়েছিলাম এটা সত্যি। তাদেরকে বাড়ির বাইরে দাঁড় করে রেখে আমি গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার তাদের সাইকেলে করে দোকানে ফিরেছি। ওই সময় আমার মা এবং বোন বাড়িতে ছিলেন। ‘ওই চারজনের সাথে দোকানে ফেরার পর তারা আমার দোকানে চা নাস্তা খেয়েছে। রাতেও তারা আমার দোকানে এসেছিল। আজ সকালে শুনি আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। এটা আমার প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র। আমি কী করবো বুঝতে পারছি না।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌকির হাসান তমাল জানান, আমরা জয়ন্তের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারও ব্যক্তিগত অভিযোগের দায় সংগঠন নেবে না।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান জানান, গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষন আইনে মামলা দায়ের করেছে দুই স্কুল পড়ুয়া কিশোরের পরিবার। গ্রেফতার আসামিকে মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠানো হবে।