আগামী সময়ে সাংসদদের সংখ্যা বাড়বে!
সংবিধানের ৮১ ধারা অনুযায়ী, ভারতের লোকসভার মোট সদস্য সংখ্যা সর্বাধিক ৫৪৫ হতে পারে। তবে আগামীতে এই ধারা বদলে লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের দিন লোকসভা কক্ষে ভাষণ রাখার সময় এই নিয়ে মোদী বলেন, 'নতুন সংসদের প্রয়োজন ছিল। আগামী সময়ে সাংসদদের সংখ্যা বাড়বে। সেটাও দেখতে হবে আমাদের। সেজন্য এখনই নতুন সংসদ ভবন তৈরি করতে হত।
প্রধানমন্ত্রী এদিন নিজের ভাষণে বলেন, “নতুন সংসদ বানানো নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চলছিল। কয়েক দশক ধরে পরিকল্পনা হচ্ছিল। সময়ের দাবি মেনেই সংসদ ভবনের উদ্বোধনের পরিকল্পনা করেছি আমরা।
এরপরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে যখন সংসদের সদস্যসংখ্যা সংখ্যা বাড়বে, তখন স্থান সংকুলান হবে না। তখন সাংসদরা বসবেন কোথায়? সেসব ভেবেই এই নয়া ভবন তৈরি। প্রায় ৯৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২২৪ আসন বিশিষ্ট সংসদ ভবনটি তৈরি হয়েছে
উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত সংসদের আসন সংখ্যা/ কোনও ভাবে পরিবর্তন করা যাবে না। তবে আগামী লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলে ২০২৬ সালের পর নতুন করে লোকসভার আসন বিন্ন্যাস করতে পারে বিজেপি। সেই ইঙ্গিতই দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
উলেখ্য ১৯৫২ সালে প্রথম লোকসভা নির্বাচনের সময় লোকসভার আসন সংখ্যা ছিল ৪৮৯। পরে তা বেড়ে হয়েছিল ৫০২। পরে ১৯৭১ সালের জনগণনা অনুযায়ী লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ৫৪৫। পরে ১৯৭৬ সালে স্থির করা হয়, ২০০১ সাল পর্যন্ত লোকসভার আসন সংখ্যা নির্ধারণের ভিত্তি বছর ১৯৭১ সালকেই ধরা হবে। সংবিধানের সেই ধারার মেয়াদ ফের ২৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়কালে। তবে ২০২৬ সালের পর বিজেপি ডিলিমিটেশনের পথে হাঁটতে পারে বলে অনেকেই মনে করছিলেন। সেই ধারণাকেই সত্যি প্রমাণিত করলেন মোদী।
সংবিধান অনুযায়ী, ভারতে প্রতি ৬ থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত ভোটারের জন্য অন্তত ১ জন করে সাংসদ থাকতে হবে। তবে বর্তমানে প্রতি সাংসদ পিছু ভোটারের সংখ্যা গড়ে প্রায় ১৮ লাখ। নতুন সংসদ ভবনের লোকসভা কক্ষে ৮৮০টি আসন রয়েছে। এদিকে শেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮৮ কোটি। এই আবহে সাংসদের সংখ্যা বাড়িয়ে ৮৮০ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পুরো বিষয়টাই এখনও জল্পনার স্তরে।
এদিকে সাংসদ সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে দক্ষিণী রাজ্যগুলির আপত্তি রয়েছে। তাদের অভিযোগ, বর্তমন জনসংখ্যার ভিত্তিতে যদি আসন বণ্টন করা হয়, সেক্ষেত্রে দক্ষিণী রাজ্যগুলির গুরুত্ব কমবে। কারণ জনসংখ্যার নিরিখে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়বে অনেক বেশি।
এদিকে উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ে বিজেপির শক্তি বেশি। এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়ানো হলে রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হবে বিজেপি। তবে এই সবের আগে সরকারকে একটি ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করতে হবে। কমিশনের সুপারিশের পর এই রিপোর্ট অনুসারে সরকারকে সংসদে ফের একটি সংবিধান সংশোধনী বিল আনতে হবে। তবে আপাতত ২০২৪ সালের আগে লোকসভার আসন সংখ্যায় কোনও বদল আসছে না।