ভিটামিন ডি-র ঘাটতিতে যে সমস্যা হতে পারে
পেশায় সাংবাদিক, বছর ২৫-এর তরুণী ইমু অফিসে কাজ মাঝেমাঝেই মেজাজ হারিয়ে ফেলছিলেন। ভুলে যাচ্ছিলেন অনেক কিছু। কাজেও মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। বেশ কিছু দিন এমন চলার পর চিকিৎসকের কাছে যান। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, ইমুর মানসিক অবসাদের কারণ শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক ওই তরুণীকে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেন। ভিটামিন ডি শরীরের অভ্যন্তরেই উৎপন্ন হয়। এর পর্যাপ্ত মাত্রা শরীরে ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাছাড়াও, এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। হাড় এবং দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সাহায্য করে এই ভিটামিন।
শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপরেও। এই ভিটামিন মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ সচল রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি-র ঘাটতি স্নায়ু সংক্রান্ত রোগের জন্ম দেয়। ‘নিউরোসাইকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার’, ‘নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডার’-এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ডি-র মাত্রা কমে গেলে শরীরে একাধিক রোগ বাসা বাঁধতে পারে। মাল্টিপ্ল স্ক্লেরোসিস, অ্যালঝাইমার্স, পারকিনসন্স, নিউরোকগনিটিভ ডিজঅর্ডারের মতো স্নায়ুর রোগ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। কোন কোন উপসর্গ দেখে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হয়েছে?
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় এই ভিটামিন। শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ঘন ঘন ভাইরাল জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছেন? এই উপসর্গগুলি শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে।
হঠাৎ চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে খেয়াল করতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি কমে গিয়েছে কি না।
শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। তার থেকে ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে, ভাল ভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আপনি অলস এবং ক্লান্ত বোধ করেন, তবে এটি ভিটামিন ডি-র অভাবের সূচক হতেই পারে।
শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হলে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা বাড়ে। সারাক্ষণ গায়ে হাত-পা ব্যথা, পিঠে ব্যথা, কোমরে ব্যথায় ভুগলে তা শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাবের ইঙ্গিত হতে পারে।
খিদে পেলেও খেতে ইচ্ছে করছে না? খিদে কমে যাওয়াও হতে পারে ভিটামিন ডি ঘাটতির লক্ষণ।
রোজের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু বদল আনলেও শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি মেটানো সম্ভব। শরীরে এই ভিটামিনের পর্যাপ্ত জোগান দিতে ডায়েটে বেশি করে দই, দুধ, ছানা, মাছ, মাশরুম, ওট্স, পালং শাকের মতো খাবার রাখতে হবে।