আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ফুলবাড়ীতে কচুরমুখি চাষে লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কচুরমুখি সবজি চাষ কম খরচে লাভ জনক হওয়ায় এই চাষে ঝুঁকে পড়ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। শুধু কচুরমুখি নয় ,পাশাপাশি লতি কচু ও পানি কচু চাষে তুলনামূলক কোন রোগবালাই ও খুব বেশি সারসহ কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। তাই এ সব চাষে খরচ কম, উৎপাদন ভাল ও স্থানীয় ভাবে সহজলভ্য পাইকারি এবং খুচরা বাজারগুলোতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগ নিয়মিত চাষিদের উৎসাহ ও পরার্মশ প্রদান করে আসছে। ফলে অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় মুখিকচু,লতিকচু ও পানি কচু চাষে একদিকে যেমন আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। অন্যদিকে মৌসুমি এই কাজে নিম্নে আয়ের পরিবারের সদস্যদের অন্তভূক্তিতে খন্ডকালিন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ পরিবার গুলোতে বাড়তি আয়ের ব্যবস্থাও হচ্ছে। সব মিলিয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি বছরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে কচুরমুখি চাষ। উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা দেশি ও উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড জাতের মুখীকচু, লতি কচু ও পানি কচুর চাষবাদ করা হয়েছে। সেই কচুর সবুজ পাতা-গাছ বাতাসে দোল খাচ্ছে। দেখে মনে হয় এ যেন এক সবুজের সমারোহ।

ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের সুজনের কুটি এলাকার কচুরমুখি চাষি দুলু মিয়া ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা এলাকার মুখী কচু চাষি মন্টু চন্দ্র বর্মন বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই দুই চাষি ১ বিঘা করে জমিতে কচুরমুখি চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তেমন কোন রোগবালাই না হওয়ায় বিঘা প্রতি আনুমানিক ৬০-৭০ মণ কচু উৎপাদনের আশা প্রকাশ করছেন। এই দুই চাষি আরো বলেন, কচু তোলার সময়ে যদি বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে পড়তে না হয় তবে সব খরচ বাদ দিয়ে তারা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করবেন বলে জানান।

উপজেলার ছোট কামাত এলাকার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহ ও পরামর্শ অনুযায়ী ২০ শতক জমিতে লতি কচু চাষ করেছেন। এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় লতি কচুর বাম্পার ফলনসহ ভাল দাম পেয়েছেন তিনি। লতি কচুর স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকায় এযাবদ পর্যন্ত তিনি মাত্র ২০ শতক জমিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা.নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, মুখীকচু সবজি চাষে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা ও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। ফলে চলতি মৌসুমে ফুলবাড়ী উপজেলায় মূখী কচু ৩৫ হেক্টর, লথি কচু ১০ হেক্টর ও পানি কচু ৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় পাশাপাশি অল্প খরচে অধিক লাভ জনক হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪ থেকে ৫ হেক্টর বেশি জমিতে মুখীকচুর চাষাবাদ বেড়েছে। আগামি ১৫-২০ দিনের মধ্যে পুরোদমে বাজারে কচু উঠতে শুরু করবে। মুখী কচু এই অ লের চাহিদা মিটিয়ে চাষি ও স্থানীয় পাইকাররা ট্রাক-পিকআপ যোগে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাবেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন