রাজশাহীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ মাদকের চালান উদ্ধার
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে ইতিহাসে এই প্রথম মাদকের সর্ববৃহৎ মাদকের চালান উদ্ধার হয়েছে।
আটক মাদক ব্যবসায়ীর নাম জিয়ারুল ইসলাম (৩৫)। তিনি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের কসাইপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
গেলো রোববার (১৮ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ৪ টার দিকে অভিযানে চালিয়ে এই মাদকের বিশাল চালান হেরোইন, ফেন্সিডিল, নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ তাকে আটক করা হয়।
আজ সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা এবং অফিসার ইনচার্জ গোদাগাড়ী মডেল থানা কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটা চৌকস দল গোদাগাড়ী পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের আচুয়া কসাইপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে জিয়ারুলের বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। অধিকতর তল্লাশির এক পর্যায়ে তার বাড়িতে বিশাল একটা আধুনিক এবং সুরক্ষিত স্টিলের তৈরি ভল্ট পাওয়া যায়। ভল্টের চাবির জন্য অনুরোধ করা হলেও জিয়ারুল চাবি না দেয়ায় এবং গোয়েন্দা তথ্য থাকার কারণে ভল্ট ভাঙ্গার জন্য ফায়ার সার্ভিসকে ডাকা হয়। ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা করে ভল্ট ভেঙ্গে তার ভিতর থেকে সাত কেজি হেরোইন হেরোইন, ১৮ বোতল ফেন্সিডিল, হেরোইন বিক্রির ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার নগদ টাকা এবং ২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হেরোইনের ব্যবসা করে আসছে। তিনি সীমান্ত থেকে বাহকের মাধ্যমে হেরোইন এনে তার বাড়িতে মজুদ করে এবং সুবিধামতো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। এ ব্যবসা করে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে। নিজের মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ, স্বর্ণ এবং হেরোইনের নিরাপদ হেফাজতের জন্য তিনি বছর তিনেক আগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এই ভল্টটি সংগ্রহ করে। উদ্ধার হওয়া ফেন্সিডিল তিনি নিজের সেবনের জন্য সংগ্রহ করেছিল। রাজশাহী জেলা তথা বাংলাদেশের মাদক উদ্ধারের ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ হেরোইন উদ্ধারের নজির খুব কম। মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত মাদক বিরোধী অভিযান চলবে। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতন রাজশাহীবাসী এবং মিডিয়া কর্মীদের সহযোগীতা কামনা করছি।
এসময় উদ্ধারকৃত হেরোইনের মূল্য আনুমানিক সাড়ে সাত কোটি টাকা এবং উদ্ধারকৃত স্বর্ণলংকারের মূল্য প্রায় বিশ লক্ষ টাকা।