কিউই পেসে দিশেহারা বাংলার ব্যাটাররা
ক্রাইস্টচার্চে হ্যাগলি ওভালের সবুজ উইকেট, বোলারদের জন্য স্বর্গরাজ্য। কথাটি ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদি-কাইল জেমিসনদের জন্য বেশ কার্যকরী। প্রথম ইনিংসে ৫০ ওভারও ব্যাটিং করতে পারলো না বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের করা ৫২১ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৬ রানেই গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা। তাতে মুমিনুল বাহিনীর ফলো অনে পড়ার পাশাপাশি শঙ্কা দেখা দিয়েছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের।
দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। টম ল্যাথামের হাতে ধরা দিয়ে ট্রেন্ট বোল্টের শিকার বনে মাঠ ছাড়েন সাদমান ইসলাম। সেখান থেকেই শুরু হয় টাইগারদের শিবিরে আসা যাওয়ার মিছিল। একে একে সেই মিছিলে শামিল হন নাঈম শেখ, নাজমুল শান্ত, মুমিনুল হক ও লিটন দাস।
১১ রানেই ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলে হাল ধরেন লিটন দাস ও ইয়াসির আলি রাব্বি। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে এই দুই জনের ব্যাটে ভর করে ২৭ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
চা বিরতি থেকে ফিরেই বোল্টের শিকার হয়ে ফেরেন লিটন। তার আগে ব্যাট হাতে করেন ৮ রান। আর লিটনের বিদায়ের মধ্য দিয়ে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরা বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছিল নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলি রাব্বির জুটি। সেই জুটি ভেঙে আরও বাংলাদেশের আরও এক উইকেটের পতন ঘটান বোল্ট। ২৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ শিবিরের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে লড়াই করছিলেন সোহান ও রাব্বি। দেখেশুনে খেলে দলকে টেনে তুলছিলেন বিপর্যয় থেকে। গড়েন ৫০ রানের জুটি।
সেখানে বাধ সাধেন টিম সাউদি। ৬২ বলে ৪১ করা সোহানকে ফেরান এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে। আর তাতেই ৮৭ রান তুলতে ষষ্ঠ উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের। ১১৮ রানে বাংলাদেশের পতন ঘটে অষ্টম উইকেটের। উইকেটের অপরপ্রান্তে আসা যাওয়ার মিছিল চলতে থাকলেও উইকেট কামড়ে ধরে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন রাব্বি। অর্ধশতক বাগিয়ে বেশিদূর যাওয়া হয়নি তার ৫৫ রান করেই জেমিসনের দ্বিতীয় শিকার বনে সজঘরে ফিরতে হয় তাকে। শেষপর্যন্ত আর তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান। যার ফলে ১২৬ রানেই থেমে যায় টাইগারদের ইনিংস।
দলের হয়ে দুই অঙ্কের রান আসে নুরুল হাসান সোহান (৪১) ও ইয়াসির আলি রাব্বির (৫৫) ব্যাট থেকে। বাকিদের ফিরতে হয় এক অঙ্কের রান করেই। কিউইদের হয়ে ৫ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। তিনটি উইকেট নেন সাউদি আর দুটি উইকেট যায় জেমিসনের ঝুলিতে।
এরআগে রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড। ৬ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৫২১ রান। দিনের শুরুতেই নিজের শতক পূরণ করেছেন আগের দিন ৯৯ তে অপরাজিত থাকা ডেভন কনওয়ে। অধিনায়কোচিত ইনিংসে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন টম ল্যাথাম। কিউইদের পাহাড়সম ইনিংসে প্রায় সাড়ে চার সেশন ব্যাটিং করেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন মুমিনুল হকের বলে। ২৫২ রান করেছেন ৩৭৩ বলে। ৬৭.৫৬ স্ট্রাইক রেটে ৩৪টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়। ক্যারিয়ারে ১২টি শতক ইনিংসে কিউই অধিনায়কের এটিই সবচেয়ে দ্রুতগতির। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৬৪ রান ছুঁতে না পারলেও হ্যাগলি ওভালের সর্বোচ্চ ইনিংসটা খেলেছেন ল্যাথাম।
এছাড়াও টম ব্লান্ডেল খেলেছেন ৬০ বলে ৫৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন।
হাসিব মোহাম্মদ