আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

হাসেম ফুড ট্রাজেডি : ৫৪ শ্রমিকের পরিবারকে অনুদান ও দোয়া মাহফিল

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত হাসেমফুড কারখানায় অগ্নি অগ্নিকাণ্ডে ৫৪ জন নিহতের ঘটনায় আজ দুই বছর পূর্ণ হল। দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে হাসেমফুড কারখানায় নিহত ৫৪ শ্রমিকদের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে কারখানা মিল কর্তৃপক্ষ। দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করে মালিকপক্ষ।

শনিবার (৮ জুলাই ) বিকেলে হাসেমফুড কারখানার ভেতরে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হাসেম ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ হাসেম, উপ-ব্যবস্থাপরা পরিচালক হাসিব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহিম, তৌসিম ইব্রাহিম, তানজিম ইব্রাহিমসহ হাসেম, নারায়গঞ্জ জেলা সহকারি পুলিশ সুপার বি-সার্কেল আবির হোসেনসহ হাসেম ফুড কারখানার কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।

হাসেম ফুডের এজিএম ক্যাপ্টেন মামুনুর রশীদ বলেন, মালিকপক্ষের পক্ষ থেকে রোজার মাঝে নিহত শ্রমিকদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার দুই বছর পূর্তি হওয়ায় নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। আজকে ২৪টি পরিবার উপস্থিত হয়ে অনুদান গ্রহণ করেন। বাকি পরিবারগুলোকে অনুদানের অর্থ পৌঁছে দেয়া হবে।

এছাড়া নিহতদের পরিবারের লোকজনকে চাকরি দেয়া হয়েছে। নিয়মিত শ্রমিকদের পরিবারের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। আমরা প্রতি বছরই শ্রমিকদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করব।

নিহত নুসরাত জাহান টুকটুকির বাবা হাসানুজ্জামান বলেন, বাবারে মেয়েকে হারিয়ে আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। মালিকপক্ষ ডেকে খোঁজখবর নেয়ায় মনটা শান্তি হয়েছে অনেকটা। নিহত আমেনা খাতুনের শিশু সন্তান রাকিমকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী রাজিব দোয়া মাহফিলে আসেন এবং অনুদান নিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, আর কোন কারখানায় যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

দোয়া মাহফিলে এসে এবং আর্থিক অনুদান পেয়ে নিহত ফিরোজা বেগমের মেয়ে সুমাইয়া বলেন, মাকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আজকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করায় এবং আর্থিক সহযোগিতা করায় মালিক পক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।

রিপনের মা নাজমা বেগম বলেন, পোলায় চলে গেছে আর কি ফিরে পামু। হেরা দোয়ার আয়োজন করছে এবং আর্থিক অনুদান দিছে এতে খুশি হইছি।

জানা যায়, ২০২১ সালের ৮ জুলাই সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫৪ জন শ্রমিক নিহত হয়। এছাড়া প্রায় অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ৯ জুলাই দুপুরে পোড়া লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় সারাদেশে স্তবদ্ধতার তৈরী হয়। এ ঘটনায় সরকারিভাবে নিহতদের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শ হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে কারখানার মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেমসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন