আর্কাইভ থেকে জনদুর্ভোগ

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে ও লালমনির হাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৫০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে, সকাল ৬টা ও ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি ৬ সেন্টিমিটার কমে ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে ও দুপুর ৩টায় পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তিস্তা আবারো ফুলে ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে চিরচেনা রূপ। হেঁটে পাড়ি দেয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝিদের। কর্মব্যস্থতা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারে।

অপরদিকে পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে গবাদি পশুপাখির খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।

পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তিস্তা বেষ্টিত নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি ও খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ১৫টি চর গ্রামের প্লাবিত হয়েছে।

পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখতে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে বলে জানান এ নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডামলিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, উজানে ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে তিস্তার পানি। যা বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই পয়েন্টে নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

এ দিকে, ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, বুধবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই এবং ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামে প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন