আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

তারকা বিহীন ব্যালেন্স দল সিলেট সানরাইজার্স

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বিপিএলে, সিলেটের ফ্র্যাঞ্জাইজির অংশগ্রহণ নিয়মিত না। যার প্রভাবও পরে দল গঠনে। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা বদলায় কিন্তু বদলায় না সিলেটের ভাগ্য। এবারো হয়নি ব্যতিক্রম। নতুন মালিকানায় এবারো দল গঠন করা হয়েছে, নাম দেয়া হয়েছে সিলেট সানরাইজার্স। ড্রাফটের আগে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দলটি নিয়েছে তাসকিন আহমেদকে। ছন্দে থাকা এই পেসার অবশ্য তাদের ভালো পছন্দ।

তাসকিন ছাড়া বর্তমান জাতীয় দলের আর কেউই নেই তাদের। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অলক কাপালি। তবে সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন তিনি। যদিও ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে লেগ স্পিন বোলিং, আর শেষের ব্যাটিং দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের আরেক অভিজ্ঞ নাদিফ চৌধুরী অনেক আগে থেকেই চলছেন বেলা শেষের পথে। এরপরেই থাকবেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, এনামুল হক বিজয়, আল-আমিন হোসেনরা। মিঠুন মিডল অর্ডারে ভরসা হতে পারলেও বাকিদের উপর আস্থা রাখা মুশকিল। বেশ অনেকদিন ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটেও রানে নেই বিজয়। মোসাদ্দেক বেশ অধারাবাহিক।

ওপেনিংয়ে মিজানুর রহমানকে দলে নিয়েছে তারা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে একটি সেঞ্চুরি আছে তার। দলে নিয়েছে ২০১৬ যুব বিশ্বকাপে খেলা শফিউল হায়াত হৃদয়কে। সেদিক থেকে পেস অলরাউন্ডার মুক্তার আলি হতে পারেন দলটির জন্য কার্যকর। বিশেষজ্ঞ পেস বোলার হিসেবে তাসকিনের বাইরে পুরো স্কোয়াডে দেশিদের মধ্যে সিলেটে রেখেছে কেবল আল-আমিনকে।

বাঁ-হাতি স্পিনে নাজমুল ইসলাম অপুর উপর আস্থা সিলেটের। জাতীয় দলের হয়ে এক সময় খেললেও অপু ছন্দ হারিয়ে একদমই বিবর্ণ।একই অবস্থা লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখনের বেলাতেও। এই দুজন ছাড়া সিলেটের স্পিনার বলতে মোসাদ্দেক ও অলক।

প্লেয়ার্স ড্রাফটে বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে সম্ভাবনাময় এক দল গঠন করেছে তারা। এই ক্যাটাগরিতে সরাসরি সাইনিং করেছে শ্রীলঙ্কার দীনেশ চান্দিমাল,ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেসরিক উইলিয়ামস ও দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রামকে।

বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে বেড়ানোর কেসরিক জুতসই ক্রিকেটার। ইনগ্রাম বেশ ভালো পছন্দ। তবে বাংলাদেশের মন্থর উইকেটে তিনি কেমন করবেন তা-নিয়ে আছে সংশয়। চান্দিমালকে বেছে নেওয়া বেশ বিস্ময়ের। শ্রীলঙ্কান এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টিতে খুব একটা আদর্শ নন। উইকেটে থিতু হতে সময় লাগে তার। তবে পাকিস্তানের সিরাজ আহমেদকে দলে ভিড়িয়ে দূর্বলতা কিছুটা হলেও কাটাতে পারবেন তিনি।

ড্রাফট থেকে তারা নিয়েছে ইংলিশ অলরাউন্ডার রবি বোপারাকে। বিপিএলে তিনি নিয়মিত মুখ। মন্থর উইকেটে বেশ কার্যকর ক্রিকেটারও। তবে বোপারা তার সেরা সময়টা পেছনে ফেলে এসেছেন।

শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো পেরেরা আর পাকিস্তানের সিরাজ আহমেদ দল পেয়েছেন চমক হিসেবে। বাঁহাতি পেসার সিরাজ আবুধাবি টি-টেন লিগে খেলেছেন। তবে আহামরি কিছুই করতে পারেননি তিনি। এবার বিপিএলে একাদশে বিদেশি খেলানো যাবে মাত্র তিনজন। কাজেই শক্তিশালী দলের জন্য চাই স্থানীয় ভালো ক্রিকেটারদের উপস্থিতি। এই জায়গায় বড় ঘাটতি সিলেটের।

সরাসরি চুক্তিতে এ’ ক্যাটাগরিতে তাসকিনকে ৭০ লাখ টাকা পারিশ্রমিকে ড্রাফটের আগেই দলে টেনেছে সিলেট।সরাসরি ও দেশি ড্রাফট মিলিয়ে মোট ১৩ জন দেশি ক্রিকেটারকে দলে টেনেছে সিলেট। দেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক হিসেবে সিলেটের কাগজে-কলমে খরচ ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বিদেশি খেলোয়াড়দের ড্রাফটে এ’ ক্যাটাগরিতে ইংল্যান্ডের রবি বোপারা পাচ্ছেন ৭৫ হাজার, ডি’ ক্যাটাগরিতে শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো পেরেরা ৩০ হাজার এবং ই’ ক্যাটাগরিতে পাকিস্তানের সিরাজ আহমেদের পারিশ্রমিক ২০ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকে কাগজে-কলমে প্রায় সাগে ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে তাদের। যা তাদের স্থান করে নিয়েছেন চার নম্বরে। 

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন