সেন্সরে বাদ পড়েনি আলিয়ার ‘খেলা হবে’
‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ ছবির ট্রেলারে আলিয়ার মুখে ‘খেলা হবে’ সংলাপ শুনে হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা বাংলায়। করণ জোহরের হাত ধরে এ রাজ্যের এক রাজনৈতিক স্লোগান গোটা দেশ, গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি হয়েছিল বাংলার আমজনতা। এমনকী, খুশির কথা সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যও। কিন্তু তারপরই ‘রকি অউর রানি প্রেম কাহানি’তে নতুন টুইস্ট! ছবির মুক্তির কয়েক দিন আগেই জানা যায়, সেন্সরের কাঁচিতে নাকি বাদ পড়েছে খেলা হবে। এমনকী, বাদ দেয়া হয়েছে নাকি রবিঠাকুরের প্রসঙ্গও। কিন্তু ছবি মুক্তির পর দেখা গেল কোথায় কী! ‘খেলা হবে’ থেকে রবীন্দ্রনাথ সবই রয়েছে ছবিতে।
এর আগে সেন্সরের কাঁচি ধরে টেনে কেন্দ্রকে দুষেছিলেন দেবাংশু। ‘খেলা হবে’ সংলাপে কাঁচি হওয়ার খবর পেয়েই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে দেবাংশু ফের বলেন, “কী অবস্থা! সেন্সরের বোর্ডের কাজ হচ্ছে সমাজের পক্ষে যেটা ক্ষতিকারক, অসামাজিক কোনও বিষয়বস্তু বাদ দেয়া। বা এমন কোনও সংলাপ-দৃশ্য, যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে, সেগুলোকে বাদ দেয়া। এরা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ হইহই করে ছেড়ে দিচ্ছে, যেখানে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে চরম দ্বন্দ দেখানো হয়েছে, আর সামান্য একটা খেলা হবে স্লোগান কিংবা একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম শুনে বলছে, বাদ দিয়ে দাও! কতটা নির্লজ্জ। এদের সময় ঘনিয়ে এসেছে।”
ছবি মুক্তির আগে এক গান প্রকাশ অনুষ্ঠানে কলকাতা পা রেখেছিলেন আলিয়া ভাট ও রণবীর সিং। সাংবাদিক বৈঠকে করণের ‘রকি অউর রানি’কে সেন্সর বোর্ডে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, আলিয়া ও রণবীর দুজনেই জানিয়েছিলেন। সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তবে এটুকু বলতে পারি, যদি কোনও দৃশ্য বা সংলাপে কাঁচি চলে, তাহলেও রকি-রানির প্রেমের গল্প দেখতে অসুবিধা হবে না। আর এর নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নেই!
শুক্রবার হইহই করে মুক্তি পেল করণ জোহরের এই ছবি। প্রথম দিনেই বক্স অফিস একেবারে ভরপুর। অগ্রিম বুকিংয়েও অনেকটা এগিয়ে এই ছবি। প্রায় তিন ঘণ্টার ছবি জুড়ে বাঙালি চরিত্রে আলিয়া ঝরঝরে বাংলা বললেন। ঠিক যেন পাশের বাড়ির মেয়েটার মতো। তারই মাঝে যে দৃশ্য বা সংলাপের জন্য এত বিতর্ক, তা কিন্তু রয়েছে বহাল তবিয়তে। বরং বদরাগী হবু শাশুড়ির বিরুদ্ধে প্রেমযুদ্ধ শুরু করার আগে, আলিয়ার মুখে খেলা হবে সংলাপ যেন আলাদা মাত্রা যোগ করে দিল। দুষ্ট লোকদের মুখে ছাই দিয়ে রকি-রানির প্রেমই যে শেষমেশ জিতবে, ছবির শেষের আগেই যেন বিজয়শঙ্খ বাজিয়ে দিল বাংলার এই খেলা হবে স্লোগান। আর হাততালি কুড়োলেন ছবির রানি চট্টোপাধ্যায় ওরফে আলিয়া। তবে শুধু ‘খেলা হবে’ নয়। রবিঠাকুরের ছবি দেখে রণবীর তাকে ‘দাদাজি’ বলায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তাতেও পানি ঢালল বাংলার দর্শক। খেপে যাওয়া তো দূরের কথা, রণবীরের মুখে একের পর এক বাংলা শুনে সিনেমা হলের ভিতর হাসির রোল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন সেন্সরের কাঁচি নিয়ে এত বাকবিতণ্ডা হল, কেনই বা কেন্দ্র-রাজ্য টানাটানি। আখেরে এই সংলাপ শুনে হাসি কুড়োলেন করণ জোহর।