শিশুর চোখের সংক্রমণ ঠেকাতে যা করবেন...
বর্ষার মৌসুমে চোখের সংক্রমণ অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্বাভাবিক জীবনে। চোখের চিকিৎসকদের কাছে উপচে পড়ছে ভিড়। কারও চোখে ছত্রাকের সংক্রমণ, কারও চোখে আবার বাসা বেঁধেছে ভাইরাস। চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই স্কুলপড়ুয়া। বেশির ভাগই আক্রান্ত হচ্ছে কনজাঙ্কটিভাইটিসে।
এই ছোঁয়াচে রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে শিশুদের মধ্যে। এই অসুখে অন্ধত্বের ভয় নেই বটে, কিন্তু সচেতন হতে হবে সংক্রমণ আটকাতে। এই রোগ মারাত্মক ছোঁয়াচে হওয়ায় স্কুলে একটি বাচ্চার হলে তার থেকে পুরো ক্লাসের খুদেদের সংক্রামিত হতে খুব বেশি সময় লাগে না। শিশুদের মধ্যে কোন উপসর্গগুলি দেখা দিলে তাকে স্কুলে পাঠাবেন না- চোখ ফুলে যাওয়া, চোখ চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ থেকে অনবরত পানি পড়া।
চোখে আলো পড়লে অস্বস্তি হওয়া, যন্ত্রণা হওয়া। সংক্রমণের কারণে চোখে ঝাপসা দেখার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
চোখে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পিচুটি তৈরি হওয়া। পিচুটির জন্য চোখের পাতা আটকে যেতে পারে। সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়- সংক্রমণ এড়াতে শিশুর তোয়ালে, গামছা, রুমাল, বিছানার চাদর, বালিশের কভার আলাদা রাখুন। এই সব জিনিজ বাড়ির অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না।
ঘরের ছোট্ট সদস্যটিকে বার বার হাত ধোয়ানোর অভ্যাস করান। কেবল বাড়িতেই নয়, স্কুলেও যেন সে ঘন ঘন হাত ধোয়ে সে কথা মনে করিয়ে দিতে ভুলবেন না। এর পাশাপাশি তাকে বার বার চোখে পানির ঝাপটা দিতে বলুন।
শিশু কি সাঁতার শেখে? সুইমিং পুলের জল থেকেও ছড়াতে পারে সংক্রমণ। সাঁতার কাটার সময় যেন সে চমশা পরে থাকে সে বিষয় নজর রাখুন। খুব প্রয়োজন না পড়লে সাঁতারে না পাঠানোই ভাল।
খুদের চোখে হালকা লালচে ভাব দেখলে অনেক অভিভাবকই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে স্টেরয়েড জাতীয় আই ড্রপ দিয়ে দেন তাদের চোখে। এই ভুল করবেন না।
বাড়িতে যদি কারও কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়, তা হলে তার থেকে খুদেকে দূরে থাকতে বলুন।
মৌসুম বদলের সময়ে চোখের সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। শত প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েও অনেক সময় লাভ হয় না। যদিও সাত থেকে দশ দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যায়। তবে সেই ক’টা দিন বন্ধু, খেলা, টিভি, মোবাইল— সব ফেলে অস্বস্তি ও যন্ত্রণা নিয়ে ঘরেই থাকতে হচ্ছে ওদের। তাই যত্নের মধ্যে রাখলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে ওরা। ওদের মন ভাল রাখার জন্য ভাল খাবার বানিয়ে দিতে পারেন, ওদের সঙ্গে খেলা করতে পারেন, গল্প শুনিয়ে মন ভাল রাখতে পারেন।