আর্কাইভ থেকে এশিয়া

লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর বরখাস্ত, বৈঠক ডাকলেন সোনিয়া

অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন (সাময়িক বরখাস্ত) নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিল কংগ্রেস। শুক্রবার সকালে দলের সংসদীয় বোর্ডের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। অধীর সংক্রান্ত বিষয়ে কৌশলগত পদক্ষেপ স্থির করতেই এই বৈঠক বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর। সংসদ ভবনে সকালে সাড়ে ১০টায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের ওই বৈঠক হবে।

নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে বুধ এবং বৃহস্পতিবার বার উঠে এসেছে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীরের নাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছেন অধীরকে। বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির শেষে ‘অসংসদীয় আচরণের’ অভিযোগ তুলে অধীরের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। বিরোধীশূন্য লোকসভায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে অধীরকে বরখাস্ত করেন স্পিকার ওম বিড়লা

বৃহস্পতিবার সভা মুলতুবির আগে স্পিকার জানিয়েছেন, যত দিন না লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি অধীরের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেয়, তত দিন তিনি সাসপেন্ড থাকবেন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। অর্থাৎ, শুক্রবার সিদ্ধান্ত না-নিলে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের সাসপেনশনের মেয়াদ গড়াবে অন্তত আগামী শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত।

অধীর তার সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের মস্তানি’ বলে চিহ্নিত করে বলেন, ‘শুধু প্রহ্লাদ জোশী কেন, বিজেপির সব নেতা মিলে যদি আমার একটা শব্দ, একটা ব্যাখ্যা মানুষের বিচারে ‘ভুল’ প্রমাণ করতে পারেন, তবে আমি আমার রাজনৈতিক জীবন ছেড়ে দেব।’

অধীরের দাবি, কোনও অসংসদীয় শব্দ নয়, ভাষার অলঙ্কার ব্যবহার করেছেন তিনি। ‘আমি কাউকে অপমান করিনি।’ চন্দ্রযান থেকে কুনোর চিতা পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ে মোদি কথা বললেও মণিপুর প্রসঙ্গে চুপ থাকায় তিনি ‘নীরব’ শব্দ এবং ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’ উপমা ব্যবহার করেছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার আরও মন্তব্য, ‘মোদী এবং শাহ ‘ইন্ডিয়া’কে ভয় পেয়েছেন।’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বহরমপুরের পাঁচ বারের কংগ্রেস সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অধীরের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’ বোঝা যাচ্ছে গণতন্ত্রের দুর্দিন এসেছে। অধীরের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু যে ভাবে লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল, তা মেনে নেওয়া যায় না। মোদীর বিরুদ্ধে যাঁরাই বলবেন তাঁদেরই এমন শাস্তি পেতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন