ইবিতে নারীর বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মঈনুল হোসেন মহিনকে ‘ব্লেড’ দিয়ে গলা কেটে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত নারীর নাম শামীমা (৩৬)। তিনি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার মধ্য বাজার এলাকার আবু বক্করের মেয়ে। সোমবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে প্রশাসন ভবন সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়া বড় আইলছাড়ার দক্ষিণ পাড়ায়। ঘটনার পর পালানোর চেষ্টা করলে ওই নারীকে ক্যাম্পাসের ফটক থেকে লোকজন আটক করে বিশ^বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে দেন। পরে তারা ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল পৌনে চারটা থেকে ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ওই ব্যাংক কর্মকর্তা অভিযুক্ত নারীর সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ওই নারী ব্যাংক কর্মকর্তার গলায় ছুড়িকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে প্রধান ফটকের সামনে থাকা লোকজন তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। পরে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডির কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এদিকে ওই কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই কর্মকর্তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া নার্স মমতাজ বলেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিকেলে আসেন। আমরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাৎক্ষণিক গলায় ব্যান্ডেজ করে কুষ্টিয়া পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে তার শ্বাসনালি কাটেনি। ব্লেড দিয়ে গলা কাটা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
তবে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই নারী। শামীমা দাবি ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে হত্যাচেষ্টা করলে তিনি ঠেকাতে যান। তার হাতেও কাটা দাগ ও জামা কাপড়ে রক্তের দাগ রয়েছে। তবে তিনি কাপড়ে নিজেই রক্তের দাগ লাগিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ওই মহিলার দাবি, বিয়ে করে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা ভালোবেসে ওই নারীকে বিয়ে করেন। কিন্তু ওই কর্মকর্তা তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘদিন যাবত তাকে অবহেলা করে আসছিলো। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে আজ দীর্ঘসময় তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই নারীকে হত্যাচেষ্টা করতে গেলে উলটো ওই কর্মকর্তার গলায় লেগে কেটে যায়।
ইবি থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে চলে আসি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মহিলাকে আটক করা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।
অগ্রণী ব্যাংক ইবি শাখার ম্যানেজার হাসিবুজ্জামান বলেন, ওই কর্মকর্তার স্ত্রী থানায় এসে মামলা করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের ১৫ আগস্টের প্রোগ্রাম নিয়ে একটু বেশি ব্যস্ত। এছাড়াও বিভিন্ন মিটিং ছিল। এজন্য এখানে আসতে পারিনি। এছাড়াও এক অধ্যাপক তাকে ডাকার কারণে তিনি ঘটনাস্থলে থাকতে পারছেন না বলে জানান। এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির সাবেক সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে থাকলেও এখন তিনি দায়িত্বে নেই বলে এড়িয়ে যান।