আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সিনহা হত্যাকাণ্ড: হাইকোর্টে প্রদীপ-লিয়াকতের ডেথ রেফেরেন্স

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডের ডেথ রেফেরেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে। 

আজ মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান।

গেলো ৩১ জানুয়ারি মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। এ হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক নন্দ দুলালের সক্রিয় ভূমিকা ছিলো। আদালতের পর্যবেক্ষনে এ তথ্য জানা যায়। 

সিনহা হত্যা মামলার রায়ে ছয়জনকে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেন আদালত। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত ও বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব এবং টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। এছাড়া রায়ে বাকি সাতজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালতের বিচারক।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন: বরখাস্ত সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ।

২০২০ সালের ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার আসামি সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিন বাসিন্দা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য, প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এরপর ২০২০ সালের ২৪ জুন চার্জশিটভুক্ত আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আত্মসমর্পণ করলে এ মামলার ১৫ আসামিই আইনের আওতায় আসেন।

প্রসঙ্গত, গত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা দায়ের করে।

ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এ চারটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। 

পরে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাীব-১৫ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।

গেল ২৭ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়। এরপর গত ২৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। যা শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। পরে গত ৬ ও ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় আসামিদের ৩৪২ ধারায় বক্তব্য গ্রহণ।

তাসনিয়া রহমান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন