সানজিদা এমন স্টেটমেন্ট দিয়ে ঠিক করেননি: ডিএমপি কমিশনার
‘সানজিদার সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। সানজিদা এমন স্টেটমেন্ট দিয়ে ঠিক করেননি। কারণ কমিশনারের অনুমতি ছাড়া তিনি এমন স্টেটমেন্ট দিতে পারেন না।’ বললেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
গণমাধ্যমে দেয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সানজিদা আফরিন নিপার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ডিএমপি কমিশনার। অনুমতি ছাড়া এভাবে তার (সানজিদা) কথা বলা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন খন্দকার গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে, এডিসি হারুন এবং ইন্সপেক্টর মোস্তফা বাড়াবাড়ি করেছেন, আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করেছি। সেই কমিটি প্রতিবেদন দেয়ার পর কার কতটুকু দোষ, সেই হিসাব করে বিভাগীয় ব্যবস্থা বা অন্য যেকোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে নিজের স্বামীকে দোষারোপ করে সানজিদা আফরিন বলেন, ‘আমার স্বামীই হারুন স্যারকে প্রথম আঘাত করে।’
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানজিদা বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকদিন ধরে সিভিয়ার পেইনে (তীব্র ব্যথায়) ভুগছিলাম। সেদিন (ঘটনার দিন) পেইনটা একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছিল। তাই তখন আমার একজন ডাক্তার দরকার ছিল। যেহেতু ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল স্যারের (হারুন অর রশীদ) জুরিসডিকশনের মধ্যে পড়ে, তাই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমি স্যারের হেল্প চেয়েছিলাম।
‘স্যারকে জানালে তিনি আমাকে বলেছিলেন- ঠিক আছে, আমি আশপাশে আছি। আমি এসে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দিচ্ছি। এরপর স্যার আসলেন। আসার পর একজন ডাক্তার ম্যানেজ হলো। এরপর তিনি কিছু টেস্ট দিলেন। আমি ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিলাম। ইকু আর ইসিজিও করানো হলো।’
সানজিদা বলেন, ‘এই ঘটনার সময় যে রুমে ইটিটি করানো হয় সেই রুমে ছিলাম আমি। ইটিটি করানোর ১৫/২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা গণ্ডগোলের শব্দ শুনি। আমার কানে প্রথম এসেছিল হারুন স্যারের কণ্ঠ- ‘ভাইয়া, আপনি আমার গায়ে হাত দিলেন কেন? আপনি তো আমাকে মারতে পারেন না। আমাকে মারছেন কেন?’
‘এরপর হট্টগোলের মধ্যে দেখলাম আমার হাজবেন্ডসহ বেশ কয়েকজন স্যারকে (হারুন অর রশীদ) মারতে মারতে ইটিটি রুমের ভেতরে নিয়ে আসলেন। ওই সময় স্যার নিজের সেফটির জন্য আমি যেখানে দাঁড়ানো ছিলাম সেই রুমের কোনার দিকে দৌড়ে এসে দাঁড়ালেন। ইটিটি রুমে এতগুলো লোক ঢোকার কারণে তখন সেখানে একটা বিশ্রী পরিবেশ তৈরি হয়। তখন আমি চিৎকার করছিলাম।”
তিনি বলেন, ‘এরপর আমার হাজবেন্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন- এই, ভিডিও কর। এরপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে, তখন আমি আমার হাজবেন্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করছিলাম।
‘যারা ভিডিও করছে আমি তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করি। এ সময় তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমার হাতেও সামান্য ব্যথা পাই। কারণ আমি চাচ্ছিলাম না, ওই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর আমার হাজবেন্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।
‘ওই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড আমার গায়ে হাত তোলে এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করে। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও আসলেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর থানা ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।’