গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতেই সাইবার নিরাপত্তা আইন : জিএম কাদের
বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সাইবার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী সরকার যেকোনো সংবাদকেই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারবে এবং এ আইনে মামলা করতে পারবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে। নিউজের পরিবর্তে টেলিভিশনে গান-বাজনা ও নাটক চলবে, কেউ সংবাদ পরিবেশন করতে পারবেন না। বলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী সমাজের এক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, এখন গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপ চলছে, আগামীতে কোনো সেন্সর দরকার হবে না। কারণ, গণমাধ্যম কোনো সংবাদই করতে পারবে না। এতে সব নিউজ চ্যানেল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে এখন গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চা করার পরিবেশ নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষের বাক-স্বাধীনতা, ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সরকার যেকোনো কাজকেই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারবে। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে জনগণ দেশের মালিক।
তিনি আরও বলেন, মালিক হিসেবেই জনগণ যদি সরকারের সমালোচনা করতে না পারেন, তাহলে সরকার রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ করলে তা ঠেকানোর উপায় কী? জনগণ যদি সরকারের সামলোচনা না করতে পারে সেখানে আর গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সরকারের সামলোচনাকে এখন রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা কখনই এক নয়। আইন করে যদি কথা বলার অধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়, সরকার বিরোধী আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয় তখন আর গণতন্ত্র থাকে না।
নির্বাচন নিয়ে জাপা শঙ্কিত উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দুটি পক্ষ যেভাবে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সহিংসতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। একটি দলের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, তারা জিততে না পারলে যেন তাদের মৃত্যু হবে। তাই তারা মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। ক্ষমতায় না থাকতে পারলে ভবিষ্যতে বর্তমান সরকারের দুর্গতি হবে এ ভেবে সরকারি দল ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দুটি দল মুখোমুখি হলেই বড় ধরনের সহিংসতা হতে পারে। তাই দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে।
এএম/