আর্কাইভ থেকে ইউরোপ

ইউক্রেনের পর এবার জার্মানীও চায় জাতিসংঘের সংস্কার

জাতিসংঘের কাজে কোনো গতি নেই। সংস্থাটির গতি আনতে শিগগিরই এর সংস্কার দরকার। এজন্য দ্রুত আলোচনা প্রয়োজন। জাতিসংঘের সাধারণ সভায় দেয়া বক্তব্যে এমন দাবি জানালেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর)নিরাপত্তা পরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে তিনি বলেন, জাতিসংঘের সংস্কার প্রয়োজন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ সংস্কার নিয়ে একটি বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনাসহ নতুন কোনো আগ্রাসী যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের মৌলিক সংস্কারের দাবি জানানোর পেই জার্মানীর পক্ষ থেকে এমন দাবি জানানো হয়। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,সংস্কার প্রশ্নে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কথা হয়েছে। আসছে বছরের সেপ্টেম্বরে এবিষয়ে আলোচনায় তিনি সম্মত হয়েছেন।

জি-৪ এর দেশগুলির সঙ্গে একটি বৈঠকেও যোগ দিয়েছিলেন বেয়ারবক। ভারত, ব্রাজিল, জার্মানি এবং জাপানকে জি-৪ দেশ বলা হয়। এরা সকলেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য হতে চায়। এজন্য একে অপরকে সাহায্যও করে দেশগুলি। তাদেরই বৈঠক ছিল বৃহস্পতিবার। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে দেশগুলির প্রতিনিধিদের।

এদিকে তাইওয়ান নিয়ে ফের কার্যত হুমকি দিয়েছে চীন। জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান জেং। বক্তৃতায় তিনি বলেন, তাইওয়ান নিয়ে চীনের ভাবাবেগকে ছোট করে দেখলে ভুল হবে। চীন এখনো তাইওয়ানকে নিজের দেশের সঙ্গে জুড়ে নিতে চায়।

একইসঙ্গে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান,বলপ্রয়োগ করে নয়, বেজিং চায় শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় তাইওয়ানকে মূল দেশের সঙ্গে যুক্ত করতে। সে আলোচনা চলছে। তার কথায়, চীনের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা নিয়ে দেশের মানুষের ভাবাবেগ সাংঘাতিক। তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে ভুল হবে।

এর আগে, শান্তি ফিরিয়ে আনাসহ নতুন কোনো আগ্রাসী যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘের মৌলিক সংস্কারের দাবি জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে রাশিয়ার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে। আর এ ব্যবস্থা জাতিসংঘকে অকার্যকর করে ফেলেছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য হলো-রাশিয়া,চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।জাতিসংঘের নেয়া কোনো সিদ্ধান্তে এসব রাষ্ট্রের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে। রাশিয়ার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা খর্ব করার পক্ষে জোরালো আহবান জানান জেলেনস্কি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো সশরীর জাতিসংঘের কোনো অধিবেশনে ভাষণ দেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ভেটো দেয়ার ক্ষমতা খর্ব করা এবং নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত সাধারণ পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বাতিল করার ক্ষমতা দিতে হবে। এবারের এ যুদ্ধ সেই বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষেও মত দেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন