আসছে জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে: প্রধানমন্ত্রী
সংবিধান অনুযায়ি গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে।জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সফল হয়েছে।আসছে জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম (ইউএনজিএ) অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফর বিষয়ে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,সংবিধান অনুযায়ি গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সফল হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে সরকারপ্রধান জানান, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে তিনি বিশ্ব শান্তি ও টেকসই সমৃদ্ধি অর্জন এবং অভিন্ন সঙ্কট মোকাবিলায় বিভাজন, সঙ্কীর্ণতা ও বিচ্ছিন্নতার পরিবর্তে একতা, সহমর্মিতা বহুপাক্ষিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জাতিসংঘ অধিবেশনে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউরেনা যুদ্ধের প্রভাবের ফলে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো এসডিজি বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ার বিষয় তুলে ধরেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের পরেও প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত ওই ক্যাটাগরির জন্য প্রযোজ্য বিশেষ সুবিধাসমূহ অব্যাহত রাখার আহ্বান করেছেন বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়দানের উদারতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমাদের সূদৃঢ় নেতৃত্ব ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে।
নিউইয়র্ক থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত অবস্থান করেন। ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাক্ষাতে দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদার করার বিষয়ে একমত পোষণ করি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি জলবায়ুতে অর্থায়ন এবং "লস এন্ড ড্যামেজ” ফান্ডকে কার্যকর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই। জেইক সুলিভান নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের সরকারের অর্জনের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি আবারও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
সরকারপ্রধান জানান, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও তাদের মধ্যে কথা হয়। বলেন, আমি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।
প্রসঙ্গত, ১৭-২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। এছাড়া তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন।
জাতিসংঘ অধিব্শেন শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ সেপ্টেম্বর লন্ডনে যান। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এসময় যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লর্ড আহমেদ বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে বিপুল পরিবর্তন বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে অবদানের জন্য আমার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অব্যাহত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমরা ঐকমত্য পোষণ করি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে বুধবার(৪ অক্টোবর) দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী।