আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ইমাম-হাফেজ পরিচয়ে প্রতারণা, মাসে আয় লাখ লাখ টাকা

ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতো ভুয়া মুফতি ও হাফেজ পরিচয় দিয়ে। চক্রটির পাঁচজনকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), আমিনুর রহমান (৩৯) ও শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।

আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন এ তথ্য জানান।

ইমাম হোসেন বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলো। তারা নামের সঙ্গ মুফতি ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার করতেন। তারা বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের কাছে এ পরিচয়ে প্রতারণা করতেন। নিজেকে মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেম পরিচয়ে তারা বলতেন, আমার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। বিল বকেয়া থাকায় টাকার অভাবে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিতে পারছি না। এভাবে মোটা অংকের টাকা সাহায্য চাইতেন।

সম্প্রতি এভাবে সিআইডির একজন নারী কর্মকর্তাকে মোবাইলে ফোন করেন মুফতি ও হাফেজ পরিচয় দেন একজন। ফোনে তিনি জানান, সে ঢাকার একটি মসজিদের ইমাম। তার স্ত্রী হাসপাতালে মারা গেছেন। হাসপাতালের বিল বকেয়া থাকায় স্ত্রীকে দাফন করতে পারছেন না। এজন্য তার এক লাখ টাকা প্রয়োজন। রাজধানীর বিভিন্ন টার্গেট ব্যক্তির নাম ঠিকানা ও পদবি জেনে তারপর বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দিতেন। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০/২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিতেন।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বিষয়ে সিআইডিতে অভিযোগ করলে অনুসন্ধানে নামে সিআইডি। অনুসন্ধানে নেমে রাজধানীর মিরপুর পল্লবী থানা ও তুরাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা আব্দুল মান্নান শেখসহ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। চক্রটি ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতো।

গ্রেফতারদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম-ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সম্বলিত ডিরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগাং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদেরসহ মোট পয়ত্রিশটি ডিরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিতো। 

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন