আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

বরিশালে ১ লাখ ৭২ হাজার ১১৯ জন করোনা টিকা গ্রহণ করেছেন

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত একমাসে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ১১৯ জন। এরমধ্যে বরাদ্দ অনুয়ায়ী বরিশাল জেলায় ভ্যাকসিন গ্রহণের হার বেশি। সবচেয়ে কম ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ঝালকাঠী জেলার মানুষ।

প্রথমধাপে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য, ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকসহ ১৫ ক্যাটাগরির মানুষের মাঝে এসব করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রদান করা হচ্ছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারী সারাদেশের ন্যায় বরিশালেও করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের উদ্ধোধন করা হয়। এরপর থেকে চলতি মাসের ৭ মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ গত একমাসে এই বিভাগে ১ লাখ ৭২ হাজার ১১৯ জন মানুষ করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।

এরমধ্যে বরিশাল জেলায় ৫৪ হাজার ৭৫৪ জন, ভোলায় ৩২ হাজার ৩৪৯ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ হাজার ৩৪২ জন, পিরোজপুরে ২৬ হাজার ৯৭ জন, বরগুনায় ১৬ হাজার ৪১১ জন ও সবচেয়ে কম ঝালকাঠী জেলায় ১৩ হাজার ১৯৬ জন। 

আরো জানা গেছে, গত ২৯-৩১ জানুয়ারির মধ্যে বরিশাল বিভাগে কোভিশিল্ডের ভ্যাকসিন এসেছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১০ ডোজ। এরমধ্যে বরিশালে এক লাখ ৬৮ হাজার ১০ ডোজ, ঝালকাঠিতে ১২ হাজার ডোজ, পিরোজপুরে ৩৬ হাজার ডোজ, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার ডোজ, বরগুনায় ২৪ হাজার ডোজ ও ভোলায় ৬০ হাজার ডোজ। 

এসব ভ্যাকসিন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আইস লাইনড রেফ্রিজারেটর (আইএলআর) বা হিমায়িত বাক্সে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

করোনা টিকা গ্রহণকারী মিথুন সাহা  জানান, করোনা ভ্যাকসিন বরিশালে আসা মাত্রই ইচ্ছে করেছি ভ্যাকসিন গ্রহণ করবো। পাশাপাশি পরিবার,সহপাঠী ও সহকর্মীদেরকেও ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছি। ভ্যাকসিন গ্রহণের পর নিজেকে অনেকটাই চিন্তামুক্ত মনে করছেন এই সম্মুখযোদ্ধা সাংবাদিক।  

বরিশালে  করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের মানুষ আজ বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন।

কেননা মানুষের জীবন রক্ষার্থেই সরকার অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কার করা এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও সমালোচনা বা গুজব না ছড়ানোর জন্য সকলকে অনুরোধ জানান মেয়র।  

বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বরিশালে করোনা ভ্যাকসিন পৌঁছাবার সাথে সাথেই ভ্যাকসিন নিতে সবার আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ সে অনুয়াযী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রথমধাপে প্রথম ডোজে ১৫ ক্যাটাগড়ির বেশি মানুষ গ্রহণ করলেও পর্যায়ক্রমে সকলকেই ভ্যাকসিন গ্রহণের আওতায় আনা হবে।  

কেননা করোনা ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। সে অনুযায়ী সরকার ভ্যাকসিন কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে নেয়ার কথা ভাবছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কেন্দ্রে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও ধরনের গুজব না ছড়িয়ে, মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য প্রচার না করে সকলকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করা উচিৎ বলে মনে করছেন এই পরিচালক।

উল্লেখ্য, বরিশাল বিভাগে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৯ এপ্রিল আর করোনা ভ্যাকসিন বরিশালে পৌঁছায় চলতি বছরের গত ২৯ জানুয়ারি।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন