আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও মুরগির দাম, মোটা চালেও নেই স্বস্তি

গত মাসের মাঝামাঝি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিম, এই তিন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, যা এখন বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত ওই দামের প্রায় দ্বিগুণে। এছাড়া বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু, ব্রয়লার মুরগির দাম।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সেগুনবাগিচা বাজারে সজিব রাইস এজেন্সির শাহাবুদ্দিন গণমাধ্যমে বলেন, মোটা জাতের বিআর ২৮ চালের দাম দেড় থেকে দুই টাকা বেড়েছে। এর প্রভাবে স্বর্ণা পাইজাম চালের দামও বেড়েছে। এখন বিআর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৫৫ টাকা, যা ৫২-৫৩ টাকা ছিল।

তবে সরু চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল আগের মতো যথাক্রমে ৬৮-৭২ টাকা এবং ৭২-৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, চলতি সপ্তাহে আরেকদফা বেড়েছে সরকারের বেধে দেওয়া পণ্য পেঁয়াজ ও আলুর দাম। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি বাছাই করা পেঁয়াজের দাম উঠেছে ১১০ টাকা পর্যন্ত। যা গত সপ্তাহের থেকে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেশি। অন্যদিকে, আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ একইভাবে বেড়ে ৮৫-৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও সরকারের বেঁধে দেয়া পেঁয়াজের দর প্রতি কেজি ৬৫ টাকা।

আবার বাজারে আলুর দাম ঠেকেছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেশি। আর সরকার নির্ধারিত আলুর দাম প্রতি কেজি ৩৬ টাকা।

একইভাবে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২০০-২১০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। নতুন করে এসব পণ্যের দাম এমন সময় বেড়েছে, যখন বাজারে প্রায় সব ধরনের শাক সবজি ও মাছের দাম আগেই বেড়ে রয়েছে।

এতে বাজার করতে এসে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে। নতুন করে বেড়ে যাওয়া পণ্যের দাম নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষদের ওপর আরও চাপ বাড়িয়েছে। ফলে বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজার দরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

শান্তিনগর বাজারে ক্রেতা মশিউর রহমান বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েও সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। উল্টো ওইসব পণ্যের দাম আরো দ্রুত বাড়ছে। তাহলে কি সরকারেরও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে?

তিনি আরও বলেন, দেড় দুই হাজার টাকায়ও এক সপ্তাহের বাজার করা যাচ্ছে না। এটা কি ধরনের অবস্থা। সব পণ্যের দাম যেন প্রতিযোগিতা করে বাড়ছে, শুধু বাড়ছে না ইনকাম। তাহলে সংসার চলবে কীভাবে?

সবজির বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, খেতে সবজি পচে নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ বিঘ্ন হওয়ায় দাম বাড়ার বড় কারণ।

সবজি বাজারঘুরে দেখা গেছে, বাজারে গোল বেগুন ১২০-১৪০ টাকা এবং লম্বা বেগুন ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলা, কচুমুখি, বরবটি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। আর ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। কম দামের মধ্যে মুলার কেজি ৫০-৬০ টাকা আর পেঁপে ৪০-৫০ টাকা।

অন্যদিকে, দর বাড়তি মাছ-মাংসেরও। কম আয়ের মানুষরা সবচেয়ে বেশি কেনে পাঙ্গাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজি এখন ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগে তুলনায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন