বিএনপি গুজব সৃষ্টি করছে: ওবায়দুল কাদের
সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি নেতারা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের নামে লাগাতার মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করছে এবং তাদের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশনা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতারা তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও গুমের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছেন। বললেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনীর যারা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সন্ত্রাস ও নাশকতা চালাচ্ছে, জনগণের জানমালের ওপর হামলা করছে তারা নিজেরাই গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকছে।
কাদের বলেন, অথচ বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজনৈতিক নেতাকর্মী বিবেচনায় নয় কেবলমাত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরই গ্রেফতার করছে। কোনো সন্ত্রাসী আত্মগোপনে থাকলে তার দায় সরকারের উপর চাপানো যায় না।
‘আওয়ামী লীগ কখনো গুম, খুন, অগ্নিসন্ত্রাস বিরোধী দল দমনের রাজনীতি করে না’ উল্লেখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গুম, খুন, সন্ত্রাসের রাজনীতি হলো বিএনপির মজ্জাগত আদর্শ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান এদেশে গুম ও খুনের অপরাজনীতির প্রচলন করেছিল। তৎকালীন সময়ে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুকে গুমের মধ্য দিয়ে এই ধারার সূচনা করে বিএনপি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়া ১৯৭৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ের দেড় শতাধিক আওয়ামী লীগ দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্যকে জেলে বন্দি রেখে নির্বাচন আয়োজন করেছিল এবং আওয়ামী লীগ দলীয় অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থিতা বাতিল করে প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০১-০৬ বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট আমলে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী অপারেশন ক্লিনহার্ট-এর মাধ্যমে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের শক্তির একমাত্র উৎস জনগণ। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যে কোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং সন্ত্রাস, নাশকতা, নৈরাজ্য ও গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
কাদের বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সমৃদ্ধির চলমান অগ্রগতিকে যে কোনো মূল্যে সমুন্নত রাখবে বাংলার জনগণ।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপির গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার শক্তি ও সামর্থ্য নেই বলেই তারা বরাবরের মতো অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের ন্যায় অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্ণয় আগুনের লেলিহান শিখায় পোড়াচ্ছে সারাদেশ। মেতে উঠেছে নির্বিচার ভাঙচুর ও সহিংসতায়।
‘অগ্নিসন্ত্রাস, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করা, মানুষ হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। তথাকথিত সরকার পতনের আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় তাদের অন্তরের জ্বালা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যর্থতার সেই আগুনে তারা বাংলার জনগণের আগামীর সম্ভবনাকে পুড়িয়ে ছাই করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস থেকে জীবন্ত ও ঘুমন্ত মানুষ, নারী ও শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে বিএনপি লাশের রাজনীতি করছে। এ দেশের রাজনীতিতে মানুষ পুড়িয়ে মারার যে পৈশাচিকতার প্রচলন বিএনপি করেছে, তা সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিপন্থী। সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জনগণের নিরাপত্তা সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।