আর্কাইভ থেকে লাইফস্টাইল

হাতের কবজি ঝিনঝিন করে, অবশ হয়ে যায়!

হাত মাঝেমধ্যেই ঝিনঝিন করে, অবশ হয়ে আসে। হাত ঝাড়া দিলে সমস্যা কমে যায়, কিন্তু রাতে সমস্যাটি প্রায়ই বেড়ে যায়। আপনি এসব সমস্যায় ভুগে থাকলে ধারণা করা যায়, আপনি কারপাল টানেল সিনড্রোমে ভুগছেন। এটি মূলত কবজির প্রদাহজনিত একটি রোগ।

কারপাল টানেল সিনড্রোম কী

কবজির হাড়গুলোকে বলে কারপাল বোনস। এই হাড়গুলোর মধ্যে ছোট একটি গহ্বর রয়েছে, নাম কারপাল টানেল। এই টানেলের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন শিরা ও স্নায়ু হাতে প্রবেশ করে, যার অন্যতম হলো মিডিয়ান নার্ভ। কোনো কারণে এ টানেলে নার্ভটি চাপ খেলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

কাদের হয়

  • মধ্যবয়সী নারী
  • অন্তঃসত্ত্বা
  • স্থূলকায় ব্যক্তি
  • ডায়াবেটিসের রোগী
  • উচ্চ রক্তচাপের রোগী
  • যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে
  • যাদের বাতের সমস্যা আছে
  • দীর্ঘক্ষণ কি–বোর্ড বা মাউস ব্যবহার করার সময় যারা কবজি বিশৃঙ্খলভাবে রাখেন
  • দীর্ঘ সময় ধরে হাত দিয়ে বারবার একই কাজ করেন যারা। যেমন লেখালেখি, সেলাই, টেনিস বা গলফ খেলা অথবা বেহালা বাজানো।
  • কবজিতে চাপ দিয়ে কাজ করেন যারা

লক্ষণ

  • কবজি, তালু ও আঙুল অসাড় হয়ে যায়
  • সবচেয়ে বেশি হয় হাতের বুড়ো আঙুল, তর্জনী ও মধ্যমায়
  • ব্যথা, ঝিনঝিন করে
  • হাত জ্বালাপোড়া করে
  • কখনো ফুলে যায়
  • হাতে শক্তি পাওয়া যায় না
  • হাতের পেশিগুলো দুর্বল লাগে
  • কবজির ব্যথায় রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে
  • খাবার খেতে, হাত মুষ্টিবদ্ধ করতে বা কোনো জিনিস ধরতে সমস্যা হয়
  • দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হলে চাপে শুকিয়ে যেতে পারে নার্ভ, যেটা থেকে হাতের মাংস শুকিয়ে বিকলাঙ্গতার সৃষ্টি হতে পারে।

রোগ নির্ণয়

চিকিৎসক প্রথমে রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় কবজি, হাতের মাংসপেশি কাঁধ ও ঘাড় দেখে থাকেন। কারপাল টানেল রোগ নির্ণয়ের জন্য একটি বিশেষ পরীক্ষা করা হয়, যেটা হলো নার্ভ কনডাকশন টেস্ট।

চিকিৎসা

  • জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।
  • দীর্ঘ সময় ধরে হাতে চাপ দিয়ে কাজ করা হলে, যেমন টাইপরাইটিং, কম্পিউটার, সেলাই; ৩০ মিনিট পরপর বিরতি নিতে হবে।
  • টেবিল ও হাতের ব্যবধান ঠিক করে নিন, হাত যাতে টেবিলের সমান্তরালে থাকে।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে।
  • হাতের কিছু নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
  • ডায়বেটিস, থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

রিস্ট স্প্লিন্ট

রাতে শোয়ার সময় আক্রান্ত হাতের কবজিতে নিয়মিত স্প্লিন্ট ব্যবহার করে ঘুমালে হাতের জ্বালাপোড়া ও অসাড় ভাব অনেকাংশে কমে যায়।

স্টেরয়েড ইনজেকশন

কারপাল টানেল সিনড্রোমের জটিলতা কমানোর পরবর্তী চিকিৎসা হলো স্টেরয়েড ইনজেকশন। স্টেরয়েড নার্ভের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।

সার্জারি

মিডিয়ান নার্ভের ওপর চাপ খুব গুরুতর হলে অথবা কারপাল টানেল সিনড্রোম রোগের স্টেজ খুব বেশি হলে কবজিতে অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন পড়ে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন