আর্কাইভ থেকে অপরাধ

পুলিশ হত্যা মামলায় আরও ২ নেতা গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল ফেনী জেলার সভাপতি জাকির হোসেন জসিম এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন খন্দকারকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে ফেনী র‌্যাব-৭ কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সাদেকুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তর মাধ্যমে এই তথ্য জানান। এর আগে, শনিবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকা থেকে তাদের দু’জনকে আটক করে র‍্যাব। আটকের পর তাদের দু'জনকে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব।

সাদেকুল ইসলাম জানান, গেলো ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকার বিভিন্নস্থানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশে ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম তার অনুসারীদের নিয়ে মহাসমাবেশ মঞ্চের পাশে অবস্থান নেয়। মঞ্চে অবস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল যে, পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলা চালিয়ে তদের মনোবল ভেঙে দেয়া। উক্ত নির্দেশনা মোতাবেক কাকরাইলে উপস্থিত কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করলে, পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

এদিকে কাকরাইলের সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি পার্টি অফিস সংলগ্ন ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম তার অনুসারীদের নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়। অগ্রসরমান দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায় এবং অপর অংশটি জসিম ও অন্যদের নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের অপর প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়। রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পরে ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপরে অতর্কিত হামলা করে। উক্ত হামলার প্রেক্ষিতে পশ্চিম প্রান্তে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদেরকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে অপর প্রান্তে পুলিশ সদস্যরা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়। পশ্চিম দিকে অগ্রসরমান পুলিশ সদস্যদের ওপর ছাত্রদল নেতা আমান এবং ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম এর নেতৃত্বে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

নাশকাতকারীদের বিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে যায়। এ সময় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকে। উপর্যপুরি আঘাতের ফলে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তার নিথর দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে। পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়।

র‍্যাব আরও জানায়, বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কনস্টেবল পারভেজের নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে। আঘাতের একপর্যায়ে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত করে ছাত্রদল নেতা আমান এবং জাকির হোসেন জসিম তাদের অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম এর বিরুদ্ধে ফেনী এবং খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন থানায় সরকারী সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বেআইনি সমাবেশ, নাশকতা, হত্যাচেষ্টাসহ সর্বমোট ১৩টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামি সংক্রন্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন