হামলার ৪৯তম দিনে গাজায় কার্যকর হচ্ছে যুদ্ধবিরতি
প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে অবশেষে ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর)স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায়)এই যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। এদিন, স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলের এক নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে ‘বন্দী বিনিময়’ প্রক্রিয়া শুরু হবে।ফিলিস্তিনি বন্দীদেরও এদিন মুক্তি দেওয়া হবে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডক্টর মাজেদ বিন মোহাম্মদ আল আনসারী যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে বলেন,‘আমরা অনুভব করেছি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে তারা খুবই শ্রতিশ্রুতিবদ্ধ।আমাদের লক্ষ্য ছিলো আপাতত এই চুক্তিকে পৌঁছানো ও পরে এই সময়সীমা আরও বাড়ানো। আশা করছি, আমরা খুব শিগগির একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছতে পারবো এবং আমাদের এটি করতে হবে।
কাতারের মধ্যস্ততায় বুধবার দীর্ঘ আলোচনার পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পরে নেতানিয়াহু প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাজায় শুক্রবারের আগে হামলা বন্ধ করবে না তারা। তেলআবিবের এই সিদ্ধান্তে হামাসও পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় যুদ্ধবিরতির আগে ইসেরায়েলি জিম্মিদেরও মুক্তি দেওয়া হবে না।
শর্ত মোতাবেক যুদ্ধবিরতি শুক্রবার থেকে কার্যকর হলে গাজায় চার দিন ইসরায়েলি হামলা বন্ধ থাকবে। এসময়ের মধ্যে অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ইসরায়েলের। একইসঙ্গে চুক্তিতে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে বলা হয়। এর বিনিময়ে ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা অন্তত ৫০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।
প্রসঙ্গত, আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ি আল আকসা মসজিদের অপবিত্রতা এবং কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে তারা নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গাজায় অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। শুধু তাই নয়, গত বছর থেকে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের শহরগুলোতে সামরিক অভিযান দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ভূখন্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রকেট হামলা চালায় হামাস। আর এর জবাবে বিমান হামলা অব্যাহত রাখে ইসরায়েল।
হামাসের হামলায় দেশটির ১ হাজার ২০০ জন বেসমারিক নিহত হন। সেদিন ইসরায়েলের ২৪০ জনকে জিম্মিও করে হামাস। হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় সেদিনই গাজায় নির্বিচারে বোমা হামরা শুরু করে ইসরায়েল বাহিনী। এর পর থেকে অব্যাহত হামলায় গাজার ১৪ হাজারের বেশি বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। নিহেতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।