নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তের আগে তারেককে যা বলেছিলেন ইবরাহিম
সম্প্রতি নতুন একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.)সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।গত ২২ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে তিনটি দল নিয়ে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে ওই নতুন জোট গঠনের ঘোষণা সৈয়দ ইবরাহিম। অন্য দুই দল হলো-বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)।
তবে জোট ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ গত ২০ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সৈয়দ ইবরাহিম। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অংশ নিয়ে ওই কথোপকথনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন নতুন জোট ‘যুক্তফ্রন্ট’র এই চেয়ারম্যান।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে পদযাত্রা, বিক্ষোভ কর্মসূচি, অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। বিএনপির এই দাবি ও আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল। বিএনপির ঘনিষ্ট মিত্র দল হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও বিএনপির কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাজপথে মিছিল আন্দোলন করেছে দীর্ঘদিন ধরে।
তবে সম্প্রতি ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন জোট গঠন করে বিএনপির ওই আন্দোলন থেকে বেরিয়ে আসা এবং আসছে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িত বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের অনেকে তাকে ‘জাতীয় বেইমান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এমন অবস্থায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অংশ নিয়ে জোট গঠনের আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনায় যেসব কথাবার্তা হয়েছে তা তুলে ধরেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করার অধিকার আমার নেই। আমি আমার জোটের প্রসঙ্গে বলতে পারব। জোট ছাড়ার তিন দিন আগে ২০ নভেম্বর সন্ধ্যাবেলা ৮টা ১ মিনিট থেকে ৮টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমাদের জোটের প্রধান নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও সম্মানের সঙ্গে কথা বলেছেন, আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন। আমিও সম্মানের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছি। সুবিধা-অসুবিধার কথা বলেছি।যেগুলো জনসমক্ষে না আসাটাই বাঞ্ছনীয়।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘কেননা একটি দলের প্রধান থেকে আরেকটি জোটের প্রধানের কথা সব কিছু জনসমক্ষে আনার প্রয়োজনীয়তা নেই।তাদের (বিএনপি) নেতৃত্বের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ প্রতিটা দলের সুবিধা-অসুবিধা আছে।’
তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার সময় জোট ছাড়ার কোনো আভাস দিয়েছিলেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘না ছাড়ার কোনো আভাস দেইনি। উনিও এমন প্রশ্ন করেননি। আলাপটা রাজনৈতিক আলাপ। দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত দুবার কথা হয়েছে।’
ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই কী আপনি তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ আলাপ-আলোচনা চলছিল। কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব পার্টির সিনিয়র নেতারা দিয়েছিলেন আমাকে। পার্টির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে আমি সিদ্ধান্ত নেই। আমি তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলি, তখন পুলসিরাতের সাঁকোর মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম। নির্বাচনে যাব নাকি যাব না।’