আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রাশিয়ান বাহিনী ‘ধর্ষণকে’ যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে

রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে ইউক্রেনের মানবাধিকার গ্রুপ। জানিয়েছে জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। 

গেলো সোমবার (১১ এপ্রিল) নিরাপত্তা পরিষদে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘে প্রতিনিয়তই ইউক্রেন নারীদের উপর রাশিয়ান সেনাদের ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার নানা অভিযোগ আসছে।  

লা স্ট্রাডা-ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কাতেরিনা চেরেপাখা বলেন, তার সংস্থার জরুরি হটলাইন নম্বরে রাশিয়ান সৈন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়ে কল দেয়া হয়েছে। ৯টি ঘটনায় ভুক্তভোগী ১২ জন নারী ও মেয়ে। 

নিরাপত্তা পরিষদে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের এটি একটি ছোট অংশ যা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অপ্রকাশিত বা অজানা রয়ে গেছে বড় অংশটিই।

কাতেরিনা আরও বলেন, জাতিসংঘ জানুক সহিংসতা ও ধর্ষণ এখন ইউক্রেনে রাশিয়ান হানাদারদের দ্বারা যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া বারবার বেসামরিক লোকদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করে আসছে।

গেলো সপ্তাহে জাতিসংঘ বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা রাশিয়ান বাহিনীর দ্বারা যৌন সহিংসতার অভিযোগ যাচাই করতে চাইছে। এর মধ্যে শিশুদের সামনে ধর্ষণ ও দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ইউক্রেনীয় বাহিনী এবং নাগরিক প্রতিরক্ষা মিলিশিয়ারাও যৌন সহিংসতা করছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ইউক্রেনের জাতিসংঘ মিশন তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

গেলো সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতিসংঘে রাশিয়ার উপরাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, তারা বারবার বলছেন বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালায় না রাশিয়া। উল্টো তিনি অভিযোগ করেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে 'রুশ সৈন্যদের হতাশাবাদী ও ধর্ষক হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য' ইউক্রেন ও তার মিত্ররা চেষ্টা করছে।

ইউএন উইমেনের নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহাউস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সব অভিযোগের স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে হবে। প্রতিনিয়তই তারা ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার কথা শুনছেন।

জাতিসংঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়স নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় 'ইউক্রেনীয় নারীদের বিরুদ্ধে রাশিয়ান সৈন্যদের যৌন সহিংসতার অভিযোগের নথিপত্রের একটি বিশেষ প্রক্রিয়া চালু করছে'।

উল্লেখ্য, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। এ অভিযানের অংশ হিসেবে স্থল, আকাশ ও পানিপথে ইউক্রেনে হামলা চালানো হচ্ছে। অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে।

সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা, এনডিটিভি।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন