আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

শিশু নির্যাতনকারী সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী: হাইকোর্ট

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মাদরাসায় ৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় ওই শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের ১৪ মার্চের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়াকে বুধবার বিকেল তিনটার দিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পরে সেটি আমলে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

উল্লেখ্য, হাটহাজারীর পৌর এলাকার মারকাজুল কোরান ইসলামি একাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী শিশু ইয়াসিন। সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল মাদরাসায় তাদের সন্তানকে দেখতে যান। কিন্তু ফেরার সময় ছোট্ট শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সে মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে।

আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাদরাসার হুজুর ইয়াহহিয়া। মা-বাবার সঙ্গে মূল ফটকের বাইরে কেন গিয়েছে শুধু এই কারণে শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। আর শিশুটি বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে। তারপরেও ক্ষান্ত হননি ইয়াহহিয়া। অনবরত চলে তার পিটুনি।

এ সময় শিক্ষার্থীদের কেউ একজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করলে, নির্মম নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেন নেটিজেনরা।

৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াসিনকে ঘাড় ধরে নিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক ইয়াহইয়া। কক্ষে নেয়ার পর তাকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটান। 

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘স্থানীয় একজন শিশুটিকে প্রহারের ঘটনা আমাকে জানান। আমি তাৎক্ষণিক হাটহাজারী থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে যাই। বাচ্চাটির সঙ্গে কথা বলি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এমন সময় ছাত্রের বাবা-মা এসে কান্নাকাটি করেন এবং শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান।’

তিনি বলেন, ‘তারা কিছুতেই মামলা করবেন না এবং আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২টা পর্যন্ত অভিভাবকেরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আইনি ব্যবস্থা না নিই।’

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন