সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ থাকবে অর্ধবেলা
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মৃত্যুতে অর্ধবেলা আপিল বিভাগের বিচারকাজ বন্ধ থাকবে। তার সম্মানে রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত বিচারকাজ বন্ধ রাখা হবে।
রোববার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সকালে আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক নির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মারা গেছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অনেক অবদান রয়েছে। দেশের সর্ব্বোচ আদালত এর আগেও বারের সাবেক সভাপতিদের মৃত্যুতে সম্মান দেখিয়েছে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আমরা তাকেও সম্মান করি।
এরপর প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে আপিল বিভাগে বেলা ১১টার পর বিচারকাজ বন্ধ থাকবে বলে জানান। প্রধান বিচারপতি বলেন, হাইকোর্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
এর আগে, শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যারিস্টার মইনুল মারা যান। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ব্যক্তিগত সহকারী আ.ন.ম. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বারিধারা জামে মসজিদে প্রথম জানাজা এবং বাদ যোহর সুপ্রিম কোর্টে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে আজিমপুর করবস্থানে তার বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে। মইনুল হোসেন স্ত্রী, পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে পদত্যাগ করেন।
মইনুল হোসেন ১৯৭৩ সালে পিরোজপুর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাকশাল প্রচলন করলে তিনি তার পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পরে তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ পরিচালিত দল ডেমোক্র্যাটিক লীগে যোগ দেন এবং ৩ নভেম্বর মোশতাক সরকারের পতন পর্যন্ত তিনি ডেমোক্র্যাটিক লীগেই ছিলেন। বাংলাদেশের সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০০০-২০০১ মেয়াদে নির্বাচিত হন।
বিখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া তার পিতা। তিনি ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর মিডল টেম্পল এ আইন বিষয়ক পড়াশোনা করেন। ১৯৬৫ সালে বার থেকে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।