ইসলামে মায়ের মর্যাদা
বর্তমান যুগে বিভিন্ন ব্যক্তি, বিষয়, ঘটনা, স্থান, উপলক্ষকে কেন্দ্র করে দিবস পালিত হয়। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গুরুত্ব বোঝানো হয়। ৩৬৫ দিনের মধ্যে অনেক দিবস রয়েছে। এর মধ্যে মা দিবস অন্যতম। মা, মায়ের গুরুত্ব, অধিকার, মর্যাদা লিখে বা বলে শেষ করা যাবে না। মহান আল্লাহ নিজেই বাবা-মায়ের মর্যাদার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই একদিন নয় প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তই হোক বাবা- মায়ের জন্য।
ইসলামে বাবা-মায়ের মর্যাদা ও অধিকার দিয়ে তাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে।
কুরআন হাদিসে পিতা-মাতার মর্যাদা বর্ণনায় অধিকাংশ স্থানেই একটি শব্দ 'ওয়ালিদাইন' বলে উভয়কে একত্রে বুঝানো হয়েছে। ইসলামে মাতা পিতার মর্যাদাকে জগতের অন্য সকলের উপরে সমুন্নত করা হয়েছে। সম্মান, মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে মা বাবার ক্ষেত্রে। কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে মা বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের বিষয়ে অধিক তাগিদ দেয়া হয়েছে। পিতা মাতা উভয়েরই রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তবে একজন নারীকে মা হতে গিয়ে যে অবর্ণনীয় কষ্ট, অসাধারণ ধৈর্য্য, অপরিমেয় কষ্ট আর ত্যাগের কুরবানি করতে হয় সে বিচারে মায়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান।
আল্লাহ বলেন- আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি উত্তম আচরণের নির্দেশ প্রদান করেছি। তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করেছে অতি কষ্টে এবং তাকে প্রসবও করেছে অতি কষ্টে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় ত্রিশ মাস। সূরা আল-আহকাফ: আয়াত- ১৫
আল্লাহ আরো বলেন- আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট (জীবদ্দশায়) বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের আচরণে বিরক্ত হয়ে 'উফ' শব্দটিও উচ্চারণ করো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়ার হাত সম্প্রসারিত করে দাও এবং বল, হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন। -সূরা আল-ইসরা।
আল্লাহ বলেন- আর আমি মানুষকে তার মাতাপিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে সুতরাং আমার ও তোমার পিতা-মাতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই। সূরা লুকমান-১৪
হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! সবচেয়ে বেশি ভালো ব্যবহারের উপযুক্ত ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার বললেন, তারপর কে? আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমার মা।লোকটি আবারো বললেন, তারপর কে? আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমার পিতা। বুখারি ও মুসলিম।
উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসের আলোচনায় বোঝা যায়- বাবা- মায়ের প্রতি কতটুকু দায়িত্ব রয়েছে। তবে বাবার চেয়ে মায়ে মর্যাদা বেশি দেয়া হয়েছে ইসলামে।