বৃহত্তর যুদ্ধ এড়াতে মধ্যপ্রাচ্যে ব্লিনকেন
সমবেত শান্তি প্রচেষ্টা ছাড়া গাজা যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ওই অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে পাঁচ দিনের এক সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সফরের অংশ হিসেবে রোববার (৭ জানুয়ারি) ব্লিনকেন জর্ডান ও কাতার সফর করেছেন। সোমবার এ নিয়ে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ উদ্দেশ্যে কাতারের রাজধানী দোহা থেকে আবুধাবি গিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে যাবেন ইসরায়েলে। চলতি সপ্তাহে তার ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও মিশরে যাওয়ারও কথা রয়েছে।
দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেছেন, “এটি এই অঞ্চলের জন্য গভীর উত্তেজনার একটি মুহূর্ত। এই সংঘাত খুব সহজেই এ অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে, আর তা আরও নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভোগের কারণ হতে পারে।”
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গালান্ট জানিয়েছেন, গাজায় আক্রমণের তীব্র ইঙ্গিত দিয়েছে তার দেশ ফিলিস্তিনি ছিটমহলটি শাসনকারী গোষ্ঠী হামাসকে ধ্বংস করতে এবং লেবাননের হিজবুল্লাহসহ ইরান-সমর্থিত অন্য প্রতিপক্ষগুলোকে নিরস্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে তিনি বলেন, “আমার মূল দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে, আমরা একটি চক্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, একক কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে না। ইরান ব্যবহার করার জন্যই ইসরায়েলের চারপাশে সামরিক শক্তি গড়ে তুলছে।”
দক্ষিণ লেবানন সীমান্তে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ ঘনঘন গোলা বিনিময় করে চলছে। আর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতিরা লোহিত সাগরে চলাচলরত জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে।
৭ অক্টোবর ভোরে সবাইকে হতভম্ব করে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এ হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে ও হামাসের যোদ্ধারা ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গেছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে।
ওই দিন থেকে হামাস শাসিত গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ২২৮৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোববার জানিয়েছেন। গেলো ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় সেখানে আরও ১১১ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। বোমার আঘাতে ছিটমহলটির বহু ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধূলার সঙ্গে মিশে গেছে। আর চারদিক থেকে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে।