আবারও যৌন হয়রানির মামলায় আদালতে ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ককাসে ব্যাপক সমর্থন পেয়ে জয়লাভ করেছেন রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার ঠিক একদিন পরেই যৌন নির্যাতন মামলায় নিউইয়র্কের আদালতে হাজির হয়ে শুনানিতে অংশ নিতে হয়েছে তাকে।
৯০ দশকে মার্কিন ম্যাগাজিনের নারী কলামিস্ট ই জ্যাঁ ক্যারলকে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে যৌন নির্যাতন করেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট- এমন অভিযোগে গত বছর ওই মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ ডলার জরিমানাও করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সেই মামলার শুনানিতে ক্যারোলের পক্ষে প্রথমবারের মতো আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী শ্যন ক্রাউলি। তিনি বলেন, ওই ঘটনা সম্পর্কে ট্রাম্পের মানহানিকর বক্তব্যের প্রায় তিন দশক পরিয়ে গেলেও এখনো বিপর্যস্ত ক্যারোলের জীবন। তাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে আবারও এক কোটি ডলার দাবি করে বাদী পক্ষ।
গত বছর আদালত ট্রাম্পকে ৫০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছিলেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার আদালতের বিচারকাজের উদ্দেশ্য ছিল, আরোপ করা ক্ষতিপূরণ যাতে ট্রাম্প দিয়ে দেন, সেটা নিশ্চিত করা।
এদিকে, যৌন নির্যাতনের মামলাটিকে প্রতারণা ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। আগামী তিন থেকে পাঁচদিন আদালতের কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন বিচারক। একইদিন সম্পত্তি জালিয়াতির অপর একটি মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্যাগ অর্ডার বহাল রাখেন নিউইয়র্কের সর্বোচ্চ আদালত।
শুনানির পর বিকেলে ম্যানহাটন ফেডারেল আদালত থেকে নিউ হ্যাম্পশায়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে বৈরি আবহাওয়া ও তীব্র তুষারপাত উপেক্ষা করে জনসভায় উপস্থিত হন তার সমর্থকরা। এ সময় ট্রাম্প বলেন, কোনো অপশক্তি ও ষড়যন্ত্র তাকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে পারবে না
এখন পর্যন্ত চারটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু এরপরও আইওয়ার রিপাবলিকান প্রার্থীর যুদ্ধে ট্রাম্প নজিরবিহীন ব্যবধানে জয় পেয়েছেন তিনি। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জরিপ এমন আভাসই দিয়েছিল। তবে আইনি ঝামেলায় ট্রাম্প যদি শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন, তাহলে রিপাবলিকানদের প্রার্থী হবেন ডিস্যানটিস অথবা হ্যালি। এই দুজনের মধ্যে আবার এগিয়ে রয়েছেন ডিস্যানটিস।
সোমবার আইওয়া ককাসের ৯০ শতাংশ ভোটের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প দখল করেন ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যানটিস পান ২১ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে, নিকি হ্যালি পান ১৯ শতাংশ সমর্থন।
আর আইওয়া অঙ্গরাজ্যের লড়াইয়ে সবচেয়ে কম সমর্থন পাওয়ার পর নির্বাচন থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিপাবলিকান নেতা বিবেক রামাস্বামী যিনি মাত্র ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। পরে তিনি ট্রাম্পের প্রতি নিজের সমর্থনের কথা জানান।
সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা