টুকিটাকি

ভিক্ষা করেই বছরে উপার্জন ২০ লাখ!

কোথাও যেতে হয়নি, কোনও কাজ করতে হয়নি। শুধু ভিক্ষার ঝুলিটি নিয়ে শহরের এক ব্যস্ত মোড়ে বসে থেকেছেন। তাতেই গেলো দেড়মাসে আড়াই লাখ টাকা উপার্জন হয়েছে তার। নিজেই স্বীকার করেছেন ইন্দওরের এক মহিলা।

গেলো বুধবার তাকে এবং তার আট বছরের কন্যাকে ভারতের মধ্য প্রদেশের ইনদওর শহরের ভওয়রাসলা স্কোয়্যার থেকে ‘উদ্ধার’ করেছে পুলিশ। ইনদওর-উজ্জয়িনী রোডের এই মোড়টি লব-কুশ স্কয়্যার নামেই বেশি পরিচিত। জেলাশাসক আশিস সিংহের নির্দেশে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। সেই অভিযানেই এই মহিলা এবং তার কন্যাকে ‘উদ্ধার’ করে তারা।

পুলিশ জানা যায়, মহিলা নিজে থেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন, গেলো ৪৫ দিন ধরে এই এলাকায় ভিক্ষা করছেন তিনি। আর এই ৪৫ দিনে তিনি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এর মধ্যে ১ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন বাড়িতে। রাজস্থানে যে বাড়িতে তার আরও দুই সন্তান মানুষ হচ্ছে তাদের ঠাকুরদা এবং ঠাকুমার কাছে। বাকি দেড় লাখ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজ়িট করেছেন। ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন ব্যক্তিগত কারণে। যদি কোন খাতে সেই খরচ হয়েছে, তা পুলিশকে জানাননি।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার যখন পুলিশ ওই মহিলাকে ‘উদ্ধার’ করে তখন তার কাছে ছিল ১৯ হাজার ২০০ টাকা। পুলিশকে মহিলা জানিয়েছেন, ওই টাকা তিনি উপার্জন করেছেন ৭ দিনে। এ ছাড়া তার আট বছরের কন্যাও গেলো বুধবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপার্জন করেছে ৬০০ টাকা।

পুলিশ জানিয়েছে, উজ্জয়িনী শহরেই এই মহিলা তার স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষা করেন। যার মধ্যে শুধু মহিলারই উপার্জন মাসে দেড় থেকে পৌনে দুই লাখ টাকা। হিসাব করে দেখা গেছে, ওই মহিলার বার্ষিক আয় অন্তত ২০ লাখ টাকা। যা যে কোনও কর্পোরেট চাকরির বেতনের থেকেও বেশি। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিভিন্ন শহরে এই পরিবারটির জমি, বাড়ি, গাড়িও রয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র এমনকি, স্মার্টফোনও।

প্রসঙ্গত, ইনদওরে এই মুহূর্তে সাত হাজারের-এরও বেশি মানুষ ভিক্ষাবৃত্তি করে উপার্জন করেন বলে জানতে পেরেছে স্থানীয় প্রশাসন। তারা এ-ও জানতে পেরেছে যে, এই সাত হাজার ভিক্ষুক ইনদওরের ৯৮.৭ শতাংশ মানুষের থেকে বেশি উপার্জন করেন। বেশ কিছু দিন ধরেই মধ্যপ্রদেশ সরকার শহরগুলিকে ভিক্ষুক মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বুধবার সেই সূত্রেই পুলিশি অভিযান চালানো হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, আট বছরের ওই শিশুকন্যাকে শিশুদের হোমে পাঠানো হয়েছে। ওই মহিলার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন